সেদিন কী আলোচনা হয়েছিল আ.লীগ কার্যালয়ে


প্রকাশের সময় : সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২২, ৫:১৫ অপরাহ্ণ / ১০৬
সেদিন কী আলোচনা হয়েছিল আ.লীগ কার্যালয়ে

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় :- ছাত্রলীগের অন্তঃকোন্দলে দুই দিন উত্তপ্ত ছিল ইডেন কলেজ ক্যাম্পাস। দুই পক্ষের সংঘর্ষে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ অন্তত ১০ জন আহত হন। এরপরই ইডেন কলেজ কমিটি স্থগিত ও সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের বিরোধীপক্ষের ১২ নেত্রীসহ ১৬ নেতা-কর্মীকে স্থায়ী বহিষ্কার করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।

এরপরই তাঁরা আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে যান। সেখানে এক ঘণ্টা অবস্থানের পর তাঁরা বেরিয়ে যান। সেখানে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে তাঁদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। সে জন্যই তাঁরা অনশন না করে ‘শান্ত’ হয়ে ক্যাম্পাসে ফিরেছিলেন।

আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে ইডেন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত নেত্রীরা কার সঙ্গে কথা বললেন, আর কী কথা হলো—জানতে চাইলে কয়েকজন নেত্রী জানান, আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে তাঁদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। সে জন্যই তাঁরা অনশন না করে ‘শান্ত’ হয়ে ক্যাম্পাসে ফিরেছিলেন। তবে নেত্রীদের কেউই এখন পরিচয় প্রকাশ করে কথা বলতে চাইছেন না।

বহিষ্কৃত নেত্রীদের নেতৃত্বে থাকা এক নেত্রী নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা যখন ধানমন্ডির আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে যাই, তখন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য সৈয়দ আবদুল আউয়াল শামীম ও উপদপ্তর সম্পাদক সায়েম খান সেখানে ছিলেন। একটু পরই সায়েম খান চলে যান। পরে সৈয়দ আবদুল আউয়াল শামীম আমাদের বলেন, তাঁর সঙ্গে আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিমের (আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং ছাত্রলীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত অন্যতম নেতা) কথা হয়েছে।

তাঁর ভাষ্য ছিল, নাছিম ভাই বলেছেন, ওদের যেতে বলো, ওদের ব্যাপারটা আমরা দেখছি, ওদের দায়িত্ব আমাদের, বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হবে। এটা বলার পর তো ওখানে আর থাকা যায় না। এ জন্য আমরা সেখান থেকে চলে আসি। তবে নাছিম ভাইয়ের সঙ্গে আমাদের সরাসরি কোনো কথা হয়নি।’

ওই নেত্রী আরও বলেন, ‘গতকাল সোমবার রাতে আমরা নানক ভাইয়ের (জাহাঙ্গীর কবির নানক, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও ছাত্রলীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত জ্যেষ্ঠতম নেতা) সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলাম। তিনি আমাদের বলেছেন, তোমরা দায়িত্বপ্রাপ্ত চার নেতার কাছে লিখিত দরখাস্ত দাও, ওবায়দুল কাদের স্যারের (আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক) সঙ্গে দেখা করো, আমরা এক জায়গায় বসে তোমাদের ব্যাপারটা নিয়ে কথা বলব।’

আরও একজন নেত্রী পুরো ঘটনার একই বর্ণনা দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের অপেক্ষায় আছি। কিন্তু আমাদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের কোনো পর্যায় থেকেই যোগাযোগ হয়নি। এখন মনে হচ্ছে, আমরাই সবচেয়ে অবহেলিত। অন্যায় করল তাঁরা (তামান্না-রাজিয়া) আর বহিষ্কৃত হলাম আমরা! তদন্ত ছাড়াই আমাদের বহিষ্কার করা হয়েছে, এটা তো অন্যায়।’

এদিকে ইডেন কলেজের বিষয়ে কথা বলতে ছাত্রলীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগ নেতা জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান ও আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিমের মুঠোফোনে কল করা হলেও তাঁরা সাড়া দেননি৷

ছাত্রলীগের অন্তঃকোন্দলে গত শনিবার রাত থেকে শুরু করে রোববার দিনভর উত্তপ্ত ছিল ইডেন কলেজ ক্যাম্পাস। রোববার সন্ধ্যায় দুই পক্ষের সংঘর্ষে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি তামান্না জেসমিন ওরফে রীভা, সাধারণ সম্পাদক রাজিয়া সুলতানাসহ অন্তত ১০ জন আহত হন। এ ঘটনায় রোববার রাতে ইডেন কলেজ কমিটি স্থগিত ও সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের বিরোধীপক্ষের ১২ নেত্রীসহ ১৬ নেতা-কর্মীকে স্থায়ী বহিষ্কার করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।