সৈয়দপুরে মাদক দিয়ে স্কুল শিক্ষককে ফাঁসানোর চেষ্টা


প্রকাশের সময় : জুন ৯, ২০২২, ২:১১ অপরাহ্ণ / ৪৫৫
সৈয়দপুরে মাদক দিয়ে স্কুল শিক্ষককে ফাঁসানোর চেষ্টা

ষড়যন্ত্রকারী র‌্যাবের হাতে গ্রেফতার শিক্ষক আব্দুল বাতেনকে ফাঁসাতে গিয়ে চিহ্নিত এক মাদক কারবারী নিজেই ধরা খেয়েছে র‌্যাবের হাতে। মোঃ আজিজুল হক মিলন নামের ওই ষড়যন্ত্রকারী এখন জেল হাজতে। সে নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার বোতলাগাড়ি ইউনিয়নের সিরাজুল ইসলাম প্রামানিকের ছেলে। তার কাছ থেকে ৬০ পিস ট্যাপেন্টাডল ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়েছে। শহরের মিস্ত্রীপাড়া বসুনিয়া মোড়ে সংঘটিত এই ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

সবার মুুুখে আলোড়িত হচ্ছে “রাখে আল্লাহ মারে কে” আর “অন্যের জন্য গর্ত করলে, সে গর্তে নিজেকেই পড়তে হয়” এই প্রবাদ বাক্য। সেই সাথে ঘৃণা প্রকাশ পাচ্ছে পুরো পরিবারের বিরুদ্ধে। এহেন ঘৃণ্য কাজের টার্গেট বোতলাগাড়ি আদর্শ বালিকা নিকেতন স্কুলের সহকারি শিক্ষক আব্দুল বাতেন জানান, আমাদের পারিবারিক জমি নিয়ে বিরোধকে কেন্দ্র করে আজিজুল হক মিলন আমাকে নিষিদ্ধ ট্যাপেন্টাডল ট্যাবলেট দিয়ে ফাঁসানোর প্রচেষ্টা চালায়।

কিন্তু আইনশৃঙ্খলা বাহিনী র‌্যাব-১৩ নীলফামারী সিপিসি-২ এর নিখুত অভিযানে মিলনের সেই প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়। বুধবার (৮মে) রাতে স্থানীয় দৈনিক মুক্তভাষা অফিসে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি জানান, শিক্ষকতার পাশাপাশি আমি কয়া মিস্ত্রিপাড়া বসুনিয়া মোড়ে একটি ভাড়া দোকানে কাপড় ব্যবসা করে আসছি। প্রতিদিন বিকেল থেকে রাত ন’টা-দশটা পর্যন্ত দোকান পরিচালনা করি।

আমাদের পৈত্রিক সম্পতি ওই আজিজুল হক মিলন গংরা জোরপূর্বক দখল করে আত্মসাৎ করার প্রচেষ্টা চালিয়ে আসছে। ইতিপূর্বে তারা একাধিকবার আমাদের জোত-জমা দখলের প্রচেষ্টা চালিয়েছে। কিন্তু আমরা বাধা প্রদান করায় তারা জোত-জমা দখল করতে পারেনি। তাই আমাকে নিষিদ্ধ মাদক মামলায় ফাঁসিয়ে আমাদের জোত-জমা দখল করার অভিপ্রায়ে সে আমার দোকানে ব্যাগসহ নিষিদ্ধ ট্যাপেন্টাডল ট্যাবলেট রাখার চেষ্টা চালায়। মাস্ক পড়ে গ্রাহক সেজে দোকানে এসে একটি গেঞ্জি কিনে সাথে থাকা ব্যাগ কৌশলে রেখে কেটে পড়ার ষড়যন্ত্র করেছিল।

কিন্তু ওই সময়েই র্যার সদস্যরা টের পেয়ে আমার দোকানের সামনে থেকে তাকে গ্রেফতার করে। তার ওই ব্যাগেই নিষিদ্ধ ট্যাপেন্টাডল ট্যাবলেট ছিল। সংবাদ সম্মেলনে আব্দুল বাতেন আরও বলেন, আজিজুল হক মিলন দীর্ঘদিন থেকে মাদক ব্যবসায় নিয়োজিত। তার একটি সংঘবদ্ধ দল আছে। মিলন ও তার দল পরিকল্পনা করে আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করে। আজিজুল হক মিলন জেলহাজতে থাকায় তার সাঙ্গ-পাঙ্গরা এখন আমাকে ফাঁসানোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে এবং আমাকে বিভিন্ন হুমকি-ধামকি দিয়ে যাচ্ছে। তাদের এমন আচরনে বর্তমানে আমি পরিবারসহ নিরাপত্তা হীনতায় ভুগছি।

আব্দুল বাতেন আরও বলেন, আজিজুল হক মিলনের সাথে আর যারা ষড়যন্ত্রে জড়িত তাদেরকেও তদন্তপুর্বক আইনের আওতায় আনতে হবে, আমি আপনাদের মাধ্যমে প্রশাসনের নিকট এ দাবী জানাচ্ছি। সেদিন ভাগ্যক্রমে বেঁচে যাই। তারা আরও নানা ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে। আবারও এই ধরণের ঘটনা ঘটানোসহ প্রাণঘাতী আক্রমণও করতে পারে। উল্লেখ্য যে, গত ২৯ মে রবিবার সন্ধ্যার পর নিষিদ্ধ ৬০ পিস ট্যাপেন্টাডল ট্যাবলেটসহ স্কুল শিক্ষক আব্দুল বাতেনের কাপড়ের দোকানের সামনে র‌্যাবের হাতে গ্রেফতার হয় আজিজুল হক মিলন।

ওই নিষিদ্ধ নেশাজাতীয় ট্যাবলেট সে আব্দুল বাতেন এর দোকানে রেখে তাকে (আঃ বাতেন) ফাঁসানোর ষড়যন্ত্র করেছিল। কিন্তু বিধি বাম। নিজেই র‌্যাবের হাতে ধরা পরে সে। এ ব্যাপারে র‌্যাব-১৩, নীলফামারী সিপিসি-২ এর পক্ষে ক্যাম্প জেসিও৮৭৩২ ডিএডি মোঃ শফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলা করেন।

মামলা নং ২০, তারিখ ৩০/০৫/২০২২ ইং। এতে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৮ এর সারনী ৩৬/১ এর ২৯(ক) ধারায় ব্যবস্থা গ্রহন পূর্বক আসামীকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে