ঘোড়াশাল-পলাশ সার কারখানাপরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু


প্রকাশের সময় : অক্টোবর ১৪, ২০২৩, ১১:৫৯ পূর্বাহ্ণ / ৭২
ঘোড়াশাল-পলাশ সার কারখানাপরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু

মো নুরনবী সানি-নরসিংদী প্রতিনিধি
নরসিংদীর ঘোড়াশাল-পলাশ ইউরিয়া সার কারখানায় পরীক্ষামূলক ইউরিয়া সার উৎপাদন শুরু হয়েছে।গত বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৫টায় সার কারখানার ইউরিয়া প্লান্টে অ্যামোনিয়া আর কার্বন- ড্রাই-অক্সাইডের বিক্রিয়া করে ইউরিয়া উৎপাদন করা হয়। একে এশিয়া মহাদেশের বৃহত্তম ও পরিবেশবান্ধব কারখানা বলে অভিহিত করা হয়। পরীক্ষামূলক সার উৎপাদনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সারকারখানা প্রকল্পের পরিচালক রাজিউর রহমান মল্লিক। তিনি বলেন, আমরা আজ ৫০শতাংশ লোডে পরীক্ষামূলকভাবে ইউরিয়া প্লান্ট চালু করে সফলভাবে ইউরিয়া উৎপাদন করতে পেরেছি। এতে প্রতি ঘণ্টায় ১৪০০ মেট্রিক টন ইউরিয়া সার উৎপাদন হবে।

এখন সারের গুণগত মান পরীক্ষার জন্য তা ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। এসময় সার কারখানার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও জাপানি প্রকৌশলীরা উপস্থিত ছিলেন। তিনি আরো বলেন, আমাদের প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিল ইউরিয়া সার উৎপাদন করা, তা আমরা সফল করতে পেরেছি।এখন ধীরে ধীরে এটার লোড বাড়িয়ে ইউরিয়া সারের উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি করা হবে। এছাড়া এ মাসের ৩০ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সার কারখানাটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দেশের ইউরিয়া সারের চাহিদা মিটানোর পাশাপাশি সুলভ মূল্যে কৃষকদের কাছে সার পৌঁছে দিতে ২০১৮ সালে এই প্রকল্পের নির্মাণ কাজ শুরু করে শিল্প মন্ত্রণালয়।

করোনা পরিস্থিতির কারণে দীর্ঘদিন পর আনুষ্ঠানিকভাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি গত ২০২২ সালের ২১ এপ্রিল এ প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এতে বছরে ৯ লাখ ২৪ হাজার মেট্রিকটন ইউরিয়া সার উৎপাদন করা সম্ভব হবে। ৪ বছর মেয়াদি এ জিপি প্রজেক্টের ব্যয় দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। কারখানাটি দৈনিক ২ হাজার ৮০০ টন হিসাবে বার্ষিক ৯ লাখ ২৪ হাজার টন গ্রানুলার ইউরিয়া সার উৎপাদন হবে। আর ১ টন সার উৎপাদনের জন্য সর্বোচ্চ ২২ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস খরচ হবে। সেদিক থেকে প্রতিদিন ২ হাজার ৮০০ টন সার উৎপাদনের জন্য তিতাস গ্যাসকে প্রায় ৭০ হাজার এমসিএফ গ্যাস সরবরাহ করতে হবে।

প্রকল্প পরিচালকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে তুলনামূলক কঠিন শর্তে সাপ্লায়ার্স ক্রেডিট হিসেবে জাপান ও চীনের ঠিকাদারদের যৌথ কনসোর্টিয়াম ব্যাংক অব টোকিও-মিতসুবিশি ইউএফজে লিমিটেড (এমইউএফজি) ও দ্য হংকং অ্যান্ড সাংহাই ব্যাংকিং করপোরেশন লিমিটেড (এইচএসবিসি) ৮ হাজার ৬১৭ কোটি টাকার ঋণ সংগ্রহ করে দেয়। কমিটমেন্ট ফি, সার্ভিস চার্জ মিলিয়ে এ ঋণের সুদের হার ৪ দশমিক ৫ শতাংশ। চার বছরের নির্মাণকালসহ মোট ১৫ বছরে কনসোর্টিয়ামকে মোট ১ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার ঋণ পরিশোধ করতে হবে। কারখানাটি দেশের কৃষি উৎপাদন, কৃষি অর্থনীতি, ব্যবসা বাণিজ্য সর্বোপরি দেশের অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখবে।