পশ্চিমবঙ্গে প্রায় প্রতিদিনই ডেঙ্গুতে এক বা একাধিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। যতই দিন গড়াচ্ছে, মশাবাহিত এই রোগে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা ততই বাড়ছে। ফলে মানুষের মধ্যেও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে। এদিকে শুক্রবার পশ্চিমবঙ্গে একদিনেই তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে দুজনের বয়স ত্রিশের কোঠায়। গত বুধবার ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ১৭ বছরের এক কিশোরের মৃত্যুর বিষয়টিও শুক্রবার নিশ্চিত হওয়া গেছে।
তবে চলতি বছর রাজ্যে ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে তেমন কোনো তথ্য দিচ্ছেন না স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা। বেসরকারি সূত্রের হিসাব বলছে, চলতি মৌসুমে এখন পর্যন্ত ৫৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে অধিকাংশই কমবয়সি।
এদিকে শুক্রবার ফাতেমা বিবি (৫৬), সঞ্জয় রায় (৩৪) ও সীমা বিশ্বাস (৩৭) নামে তিন জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। প্রথম দুজন বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে মারা গেছেন। আর সীমা মারা গেছেন সল্টলেক আমরি হাসপাতালে। জানা গেছে, চলতি মৌসুমে অর্থাৎ জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ৫০ হাজার।
সূত্রের খবর অনুযায়ী, গত বুধবার বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে মৃত্যু হয় বারাসতের বাসিন্দা ১৭ বছরের এক কিশোরের। ডেঙ্গু সংক্রমণের কারণে তার কিডনি ও লিভার বিকল হয়ে গিয়েছিল। অপরদিকে কয়েক ধরেই জ্বরে আক্রান্ত ছিলেন ভাঙড়ের বাসিন্দা ফাতেমা।
শুক্রবার ভোরে তাকে আইডি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু দ্রুত অবস্থার অবনতি হতে থাকায় দেওয়া হয় ভেন্টিলেশনে। চিকিৎসকরা জানান, সিভিয়ার ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ছিলেন তিনি। বেলেঘাটার ওই হাসপাতালেই গত বৃহস্পতিবার থেকে আইসিইউতে ছিলেন ভাঙড়ের বাসিন্দা সঞ্জয়।
তার স্বজনরা জানিয়েছেন, সপ্তাহ খানেক আগে তার ডেঙ্গু পজিটিভ আসে। জিরানগাছা প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে গেলে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। সে অনুযায়ী হাসপাতালের বহির্বিভাগে চিকিৎসা করাচ্ছিলেন সঞ্জয়। কিন্তু বৃহস্পতিবার থেকেই অবস্থার অবনতি হয়।
পরে তাকে আইডি হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।পরে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়। কিন্তু তাকে আর বাঁচানো যায়নি। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তার শরীরে মারাত্মক পানিশূন্যতা তৈরি হয়েছিল। ফলে রক্তচাপ ও নাড়ির স্পন্দন পাওয়া যাচ্ছিল না।
অন্যদিকে, প্রায় চার সপ্তাহ আমরিতে চিকিৎসাধীন ছিলেন বনগাঁর বর্ধনবেড়িয়ার বাসিন্দা সীমা। তিনি ডেঙ্গু সংক্রমণ নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন। সেখান থেকে অন্য ব্যাক্টিরিয়াজনিত সংক্রমণে আক্রান্ত হন। সীমার শ্বাসনালি সংক্রমিত হয়ে পড়ে। অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে ভেন্টিলেশনে দেওয়া হয়। ২০ দিন এমন চলার পর সেপসিসে আক্রান্ত হয়ে মারা যান তিনি।
আপনার মতামত লিখুন :