সৈয়দপুরে জমি নিয়ে দ্বন্দ্ব প্রতিপক্ষের হামলায় ৮ জন আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি


প্রকাশের সময় : জুলাই ৬, ২০২২, ১২:৫০ অপরাহ্ণ / ৪৩৭
সৈয়দপুরে জমি নিয়ে দ্বন্দ্ব প্রতিপক্ষের হামলায় ৮ জন আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি

নীলফামারীর সৈয়দপুরে জমি নিয়ে দ্বন্দ্বে প্রতিপক্ষের হামলায় ৮ জন আহত হয়ে সৈয়দপুর ও নীলফামারী সদর হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। আহতদের মধ্যে ৫ জন প্রার্থমিক চিকিৎসা শেষে বাসায় ফিরেছে। গত ৪ জুলাই উপজেলার বোতলাগাড়ী ইউনিয়নের উত্তর সোনাখুলী সরকার পাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। অভিযোগে জানা যায়,মোশাররফ হোসেনের দাদা বাকাউল্লাহ মামুদ ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে হঠাৎ করে হার্ট এ্যাটাক করে। তাকে সুচিকিৎসার জন্য প্রথমে সৈয়দপুর ১০০ শয্যা হাসপাতাল ও পরে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

 

পরে তিনি কিছুটা সুস্থ্য হয়ে বাড়ী ফিরে জমি ভাগাভাগির কথা বলেন। মৃত্যুর আগে তিনি জমিগুলো অংশীদারের মধ্যে ভাগ বাটোয়ারা করে দিতে চান। তার কথামত স্থানীয় আমিন দিয়ে জমি মাপজোক করা হয়। এতে ওই স্থানের মহুবর নামে একজনের কাছে কিছু জমি চলে যায়। ওই মহুবর জমি ছেড়ে দিতে নারাজ। এ অবস্থায় ওই সালের ৬ ডিসেম্বর বাকা উল্লাহ মামুদ মারা যান। তিনি মারা যাওয়ার পর অংশীদাররা ওই জমি মাপজোক করতে গেলে এতে বাঁধা দেয় মবুল। পরে মবুল, জাহাঙ্গীর ও জাকির জোড়পুর্বক পাকা দোকান ঘর নির্মাণ করে দখলে নেয়া জমিতে। এতে বাঁধা দিলে তাদের সাথে ঝগড়া বাঁধে। থানা পুলিশ আসে। পরবর্তীতে স্থানীয়ভাবে বেশ কয়েকবার সালিশ বসে কিন্তু সমস্যার সমাধান হয়না কোন। জোড়পুর্বক দখলে নেয়া জমি ছেড়ে দিতে নারাজ জাকির গং।

 

সর্বশেষ সালিশ বসে ২০২২ সালের ৩০ জানুয়ারি। ওই সালিশে চেয়ারম্যান ও গন্যমাণ্যরা সিদ্ধান্ত দেয় জমি ছাড় দেয়ার। কিন্তু এতে প্রতিপক্ষ রাজি হয়নি। ফলে সমাজে শান্তি রক্ষা করতে বিজ্ঞ সহকারী জজ আদালত সৈয়দপুর নীলফামারীতে মামলা দায়ের করে রফিকুল গং। যার নং – ৫৬/ ২২। মামলাটি বর্তমানে আদালতে বিচারাধীন আছে। এদিকে হঠাৎ করে গত ৪ জুলাই বিকেলে ঘটনা স্থান পরিদর্শনে যান সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শামীম হুসাইন। সাথে ছিলেন বোতলাগাড়ী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান জুন। তারা ঘটনা স্থানে যাওয়া মাত্র বাদী পক্ষের একটি দোকান ভেঙ্গে দেয় বিবাদী পক্ষ। এ সময় বাদী ও বিবাদী পক্ষের প্রায় অর্ধশত নারী পুরুষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।

 

অনেকের হাতে বাঁশের লাঠি,কাঠ,ছুরি নিয়ে একে অপরকে মারতে আসতে দেখা যায়। এ সময় মহুবর,আবদার,সাগর,মবুল,জাকির,আমজাদ,শেখ কাছি,শিল্পী,মনিজা,মৌসুমী,বিজলী,রুমানা,ফাতির আঘাতে আহত হয় মোশাররফ হোসেন (২৫), জয়নাল আবেদীন (৩২), লিজা আক্তার (১৬), রফিকুল ইসলাম (৫০), তাহেরা বেগম(৩৫), শহিদুল ইসলাম (৫০), মহসিনা বেগম(৪৬) ও রাসেল সরকার (১৯)। এদের কারো হাতের আঙ্গুল,পায়ের আঙ্গুল,ঘাড়,মাথা,পিঠ কেটে রক্তাক্ত হয়। এদের মধ্যে ৫ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। তিনজন মোশাররফ হোসেন,জয়নাল আবেদীন ও লিজা আক্তারকে নীলফামারী সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এলাকাবাসীর প্রশ্ন একজন প্রশাসনিক কর্মকর্তার সামনে কেন এ ধরনের ঘটনা ঘটলো তা দুঃখজনক।

 

এ ঘটনায় তাহের নামে একজনকে আটক করা হয়। পরে ওই দিন রাতে ভ্রাম্যমাণ আদালতে তাকে তিন দিনের বিনাশ্রম কারাদন্ড দেয়া হয়। এদিকে মামলার বাদি রফিকুল গং জানান,তাদেরকে মামলা তুলে নিতে হুমকী দেয়া হচ্ছে। অন্যথায় মামলা তুলে না নিলে মিথ্যা নারী নির্যাতন মামলা দিয়ে উল্টো বাদিকে ফ্যাসানো হবে বলে ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। এ বিষয়ে চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান জুন বলেন, জমি নিয়ে দ্বন্দ্ব চলে আসছে প্রায় তিন বছর থেকে। বার বার সালিশ ডাকা হয়। কিন্তু কোন পক্ষেই ছাড় দিতে নারাজ।