বিএনপি নিয়ে নুরুল হককে প্রশ্ন


প্রকাশের সময় : আগস্ট ৩, ২০২২, ৮:০২ অপরাহ্ণ / ৭১৯
বিএনপি নিয়ে নুরুল হককে প্রশ্ন

গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীতে এক আলোচনা সভায় গণ অধিকার পরিষদের সদস্যসচিব নুরুল হক বলেছিলেন বিএনপি ও আওয়ামী লীগের চরিত্র একই। গত ৩৪ বছর তাঁরা দুই দলের শাসন দেখেছেন, এদের দিয়ে হবে না। এ বক্তব্যের উল্লেখ করে সাংবাদিকেরা বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের কাছে এ বিষয়ে জানতে চান।

জবাবে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি অনুরোধ করব, এটা নুরু (নুরুল হক নুর) সাহেবই উত্তর দেবেন।’ এ পর্যায়ে সাংবাদিকেরা নুরুল হককে প্রশ্ন করেন, আপনার গতকালের বক্তব্য আর আজকের অবস্থান মেলে না।

নুরুল হক বলেন, ৩৪ বছর আওয়ামী লীগ ও বিএনপি ক্ষমতায় ছিল। এটা ঠিক যে তাদের শাসনতান্ত্রিক ব্যবস্থাপনায় অনেক কিছুর মিল থাকে। এখন বাংলাদেশ যে জায়গাটায় দাঁড়িয়েছে, সেখানে নতুন বন্দোবস্ত, নতুন ব্যবস্থাপনা দরকার। সে ক্ষেত্রে বিএনপি তো তার পুরোনো অবস্থান থেকে সরে এসেছে। তারা নির্বাচন-পরবর্তী বর্তমান ব্যবস্থার পরিবর্তনে একটা জাতীয় সরকার প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দিয়েছে।

নুরুল হক বলেন, ‘আমরা এখানে যে শাসনতান্ত্রিক সংস্কারের কথা বলছি, সংবিধানের ৭০ নম্বর অনুচ্ছেদের পরিবর্তনসহ বিশেষ ক্ষমতা আইন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ গণবিরোধী আইন বাতিল করা—সেখানে বিএনপি একমত পোষণ করেছে। আমরা প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার ভারসাম্যের কথা বলেছি, এখনেও বিএনপি একমত পোষণ করেছে। সুতরাং এই নতুন বন্দোবস্তিতে শুধু বিএনপি নয়, আওয়ামী লীগও যদি একমত পোষণ করে, সেটাও আলোচনা হতে পারে।’

এ পর্যায়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি একটু কথা বলতে চাই। সেটা হচ্ছে বিএনপি কী করেছে না করেছে, সেটা দেশের মানুষ সবাই জানে। আপনারা জানেন যে একদলীয় শাসনব্যবস্থা বাকশাল থেকে বহুদলীয় গণতন্ত্রে ফিরিয়ে নিয়ে এসেছিল বিএনপি। সংসদীয় গণতন্ত্র নিয়ে এসেছিল বিএনপি। এ দেশে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করেছে বিএনপি। বিচারপতি নিয়োগের ব্যাপারে কমিশন করা, রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্যের কথাও বিএনপির ভিশন ২০৩০তে আছে। অর্থাৎ তাদের চিন্তা এবং আমাদের চিন্তার মধ্যে মৌলিক কোনো পার্থক্য নেই।’

সাংবাদিকদের সব সময় ইতিবাচক দিক সমর্থন করার অনুরোধ জানিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘জাতির বর্তমান যে অবস্থা, সেখানে বিএনপি বা গণ অধিকার পরিষদ লড়াই করলে কিন্তু সফলতা আসবে না। আপনাদের অবস্থান থেকেই লড়াই করতে হবে আপনাদের স্বাধীনতাকে রক্ষা করার জন্য।

ডিজিটাল সিকিউরটি অ্যাক্টসহ বিভিন্ন নিবর্তনমূলক আইন আপনাদের ধ্বংস করে দিচ্ছে, আপনারা লিখতে পারছেন না প্রাণ-মন খুলে। অনেক গুণী সাংবাদিক দেশে ছেড়ে চলে গেছেন। এই লড়াই শুধু বিএনপি লড়াই নয়, এই লড়াই জাতির বেঁচে থাকার, অস্তিত্বের লড়াই।’

সংলাপে বিএনপির প্রতিনিধি দলে স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন স্বপন উপস্থিত ছিলেন। অন্যদিকে রেজা কিবরিয়া ও নুরুল হক ছাড়াও সংলাপে গণ অধিকার পরিষদের আটজন নেতা অংশ নেন।