দেবীগঞ্জে চলতি বছরে ডাক হচ্ছে না খেয়া ঘাট, রাস্তা বন্ধ করলেন ফুয়াং কোম্পানি


প্রকাশের সময় : মার্চ ২২, ২০২৪, ১১:০০ অপরাহ্ণ / ২০
দেবীগঞ্জে চলতি বছরে ডাক হচ্ছে না খেয়া ঘাট, রাস্তা বন্ধ করলেন ফুয়াং কোম্পানি

মোঃ মোমিন ইসলাম সরকার, দেবীগঞ্জ পঞ্চগড় প্রতিনিধিঃ পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ – উপজেলার ২ নং শালডাংগা ইউনিয়নের ৭-৮ নং ওয়ার্ডের করতোয়া নদীর চর দখলের পায়তারা চলছে বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী। ফুওয়াং বোলিং সার্ভিসিং নামের একটি কোম্পানি এ অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানান তারা। চর দখল হলে কোম্পানির বর্জ্যে দূষিত হবে নদী, সংকটে পড়বে স্থানীয় কৃষকসহ হিন্দু সম্প্রদায়, এমনটাই মনে করছেন তারা।

এদিকে চর দখলের পাশাপাশি ২ টি খেয়া ঘাট ও ঘাটের রাস্তা বন্ধ করে বালু দিয়ে বড় ভিত্তি স্থাপন করে রেখেছে কোম্পানি,, এলাকাবাসী ও দুই টি ঘাটের মাঝি সহ লোকজন বলেন কোম্পানি জমি কেনার নামে তারা অবৈধভাবে ঘাটের যাতায়াতের রাস্তা বন্ধ করে রেখেছে,, লোকজন কি ভাবে নৌকায় করে পাড় হবে, যদি রাস্তা ঘাট না থাকে,, পরে কিছু লোকজন ও এলাকাবাসী এবিষয়ে জেলা প্রশাসক ও জেলা পরিষদ কে অবগত করেন ,,,

স্থানীয়রা জানান, নদীর ২ হাজারের বেশি মিটার চর দখল করে সেখানে চলছে মাটি ভরাট, বাউন্ডারি প্রাচীরের খুঁটি স্থাপন। নদীতে ড্রেজার মেশিন আর স্কেভেটর বসিয়ে মাটি ভরাট চলছে ধুমধাম। কেউ বলছেন পাওয়ার প্লান্ট, কেউ বলছেন গার্মেন্টস হচ্ছে এখানে।

এলাকাবাসী আরও জানান, দীর্ঘদিন ধরেই কোম্পানিটি এ চর দখলের অপচেষ্টা চালিয়ে আসছে। চর দখলে বাঁধা দিলে স্থানীয় কয়েকজনের নামে মিথ্যা মামলাও করেছে তারা।

স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন বলেন, চরটির একপাশে আমরা শ্মশানঘাট হিসেবে ব্যবহার করছি। যেভাবে চর দখল করে প্রাচীর দেওয়া হচ্ছে তাতে আমাদের শ্মশানঘাট যাওয়ার পথ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এরপরে লাশ নিয়ে আমরা কোথায় যাবো? স্থানীয়রা নদীর চর দখল বন্ধের জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা যায়, ২ নং শালডাঙ্গা ইউনিয়নের চরপাড়া গ্রামের উত্তরদিকে শুরু করে দক্ষিণ দিকে অমরখানা দেবত্তর পাড়া পর্যন্ত ২ হাজার ২০০ মিটার লম্বা মোট ১৬৮ একর নদীর চর দখল করা হয়েছে। নদীর মাঝামাঝি দেওয়া হয়েছে ১৫-২০ ফুট প্রস্থের একটি ড্রেন। বাউন্ডারি প্রাচীরের জন্য নির্মাণ করা হচ্ছে আরসিসি খুঁটি। মাটি ভরাটের জন্য নদীতে বসানো হয়েছে ড্রেজার মেশিন ও স্কেভেটর।

স্থানীয় ফরিদুল ইসলাম, জাকির হোসেন জানান- চরে আমরা রসুন, পেঁয়াজ, মরিচ, ভুট্টা, ধান চাষ করছি। যেভাবে নদী দখল হচ্ছে, আর আবাদ করা সম্ভব হবে না। নদী থেকে আমাদের খাদ্যের যোগান ছিল,এখনতো আর সেটা হবেনা। এটা বন্ধের জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা।

ঘাট বন্ধ করার বিষয়টি ফুওয়াং বোলিং সার্ভিসিং লিমিটেডের মো.কালাম জানান, ১৬৮ একর জমি ক্রয় করা হয়েছে ২ হাজার ২০০ মিটার ছাড়াও নদীর ওপারে আরো কিছু জমি আছে। তবে ঘাট বন্ধ করা ও
তার ঊর্ধতন কর্তৃপক্ষ নদীর চর দখল বিষয়ে কথা বলতে নারাজ।

ঘাট বন্ধ করার বিষয়টি নিয়ে পঞ্চগড় জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নান শেখের কাছে জানতে চাইলে, তিনি বলেন নদীর চর দখল করে নিয়েছে সেটা প্রশাসনিক কিছু বিষয় আছে,,তবে আমাদের খেয়া ঘাট ও ঘাটের রাস্তা বন্ধ করে তাঁরা এই ভাবে কার্যক্রম চালাতে পারেন না,, শুনেছি কিছু জমি কিনে তারা মাটি ভরাট করছে ও খেয়া ঘাট ২ টি বন্ধ করে রেখেছে তারা। তবে বিষয়টি আমার পরিষদের সদস্য আক্তার হোসেন নিউটন কে সরেজমিনে গিয়ে তদন্ত করে দেখার জন্য বলছি।।

পরে এ বিষয়ে পঞ্চগড় জেলা পরিষদের সদস্য আক্তার হোসেন নিউটনের সাথে সাক্ষাৎ করলে তিনি বলেন,, আমি
ইতোমধে সেখানে কোম্পানিটির চলমান কাজ বন্ধ করে দিয়েছি,, এবং খেয়া ঘাটের রাস্তা টি খুলে দিতে বলেছি বলে জানিয়েছেন,, পঞ্চগড় জেলা পরিষদের সদস্য আক্তার হোসেন নিউটন।