ভোট চোর নিয়ে আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় উপকমিটির সদস্য শ্যামল দাশ টিটুর একটা প্রশ্ন?


প্রকাশের সময় : সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২৩, ১১:০০ পূর্বাহ্ণ / ৫৯
ভোট চোর নিয়ে আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় উপকমিটির সদস্য শ্যামল দাশ টিটুর একটা প্রশ্ন?
খুলনা ব্যুরো
বিএনপির কিছু বন্ধুরা ভোট চোর, ভোট চোর করে শ্লোগান দিতে দিতে গলা ফাটিয়ে ফেলছে ইদানিং। তাদেরকে একটু জল গরম করে লবণ মিশিয়ে খেয়ে নিতে অনুরোধ করছি। নতুবা গলা ছেলেছুলে গেলে আবার সমস্যা হবে।
এই শ্লোগানটি শুনে আমারও মনে একটাই প্রশ্ন জাগে। সেটা হলো, আওয়ামীলীগ ভোট চোর হলে বিএনপি কি?
জিয়াউর রহমান ১৯৭৭ সালের ২১শে এপ্রিল তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েমকে সরিয়ে self declared রাষ্ট্রপতি বনে যান। এটা কে না জানে? এটা কি গনতান্ত্রিক কোন পদ্ধতি ছিল?
তারপর জিয়াউর রহমান নিজেই  ৩০শে মে ১৯৭৭ সালে একা রাষ্ট্রপতি প্রার্থী হয়ে হ্যাঁ, না ভোট দেন। ভোটারদের কাছে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, আপনি কি রাষ্ট্রপতি মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমানের প্রতি এবং তার দ্বারা গৃহীত নীতি ও কার্যক্রমের প্রতি আস্থাশীল? ভোটের ফলাফল ছিল, ৯৮.৯% হ্যাঁ এবং মোট ভোট সংগৃহীত হয়েছিল, ৮৮.১% । কোথাও কোথাও ১১০/১২০% ভোট পড়েছিল। ভোট গ্রহণের দায়িত্বে নিয়োজিত প্রিজাইডিং ও পোলিং  অফিসারদের কাজই ছিল হ্যাঁ ভোটের বাক্স ভরে দেয়া। এটা কে না জানে? এটাকে ভোট চোর বলা ঠিক হবে,  নাকি ভোট ডাকাতি বলা ঠিক হবে সেটা আপনারাই ভাবুন।
তারপর ১৯৭৯ সালের ১৮ই ফেব্রুয়ারি ২য় জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের অধীনেই। বিএনপি ২০৭টি আসন পেয়েছিল। নবগঠিত একটা রাজনৈতিক দল যখন দুই তৃতীয়াংশ আসনে জয়লাভ করে, তখন বুঝাই যায় সেই নির্বাচনে ভোট চুরি হয়েছিল, নাকি ভোট ডাকাতি হয়েছিল?
এবার আসা যাক  ৯০ এর গণঅভ্যুত্থানের পর গনতান্ত্রিক যুগ শুরু হবার পর ১৯৯১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় এসে ১৯৯৬ সালে তিন জোটের রূপরেখা অনুযায়ী তত্বাবধায়ক সরকার গঠন করে নির্বাচন দিতে না চাইলে আওয়ামীলীগ আন্দোলন শুরু করে। তারপরও বিএনপি একতরফাভাবে ১৫ই ফেব্রুয়ারি ভোটারবিহীন একটা নির্বাচন করে ক্ষমতায় টিকে থাকার চেষ্টা করে। কিন্তু বিরোধীদলগুলোর আন্দোলনের মুখে টিকতে না পেরে তত্বাবধায়ক সরকার বিল পাশ করে নির্বাচন দিতে বাধ্য হয়। বিএনপির কিছু বন্ধুরা বলে, তত্বাবধায়ক সরকার গঠনের জন্য ১৫ই ফেব্রুয়ারির একতরফা নির্বাচনটি করেছিল। তাই যদি হবে তাহলে আগের সংসদে সেটা পাশ করলো না কেন? সেটাই যদি হবে, তাহলেতো ভোটারবিহীন একটা নির্বাচন করে শত শত কোটি টাকা খরচ করার কোন দরকার ছিল?
সর্বশেষ ২০০৬ সালে নির্বাচন দেয়া নিয়ে টালবাহানা করতে করতে শেষমেশ ১/১১ এর জন্ম হয়েছিল।
এইতো বিএনপির জন্মলগ্ন থেকে শেষ অব্দি সুষ্ঠ ভোট ও সুন্দর গণতন্ত্রের নমুনা। তো, এই বিএনপি যদি আওয়ামীলীগকে অগণতান্ত্রিক ও ভোট চোর বলে আখ্যায়িত করে, তাহলে বিএনপিকে কি বলা উচিৎ হবে বলে আপনারা মনে করেন ?
মুই কিছু ব লু ম না। শুধু বলবো, সুই যদি ঝাঁঝরকে বলে তোর পুংগায় ফুটো তাহলে ক্যামুন্ডা লাগে!
আর আওয়ামীলীগের আমলে ২০০১ সালে শেখ হাসিনা নিরপেক্ষ সরকার গঠন করে নির্বাচন দিয়েছিল এবং সেই নির্বাচনে বিএনপি ক্ষমতায় এসেছিল । ২০১৪ সালে বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেয়নি। অতএব এটা নিয়ে বিতর্কের কোন প্রয়োজন নেই। আর ধরলাম ২০১৮ সালের নির্বাচনটা প্রশ্নবিদ্ধ ছিল।
 অতএব, বিএনপি এবং আওয়ামীলীগ আমলের নির্বাচনগুলো নিয়ে তুলনামূলক আলোচনা করলে, বা পার্থক্য টানলে ফলাফল কি দাড়ায় সেটাও আপনারা বলুন।
জয়তু শেখ হাসিনা