সরকারের সঙ্গে সমঝোতা করে নির্বাচন কমিশন (ইসি) দেড় শ আসনে ইভিএমে ভোট গ্রহণের সিদ্ধান্ত : মির্জা ফখরুল


প্রকাশের সময় : আগস্ট ২৪, ২০২২, ৩:০৪ অপরাহ্ণ / ৩৪৭
সরকারের সঙ্গে সমঝোতা করে নির্বাচন কমিশন (ইসি) দেড় শ আসনে ইভিএমে ভোট গ্রহণের সিদ্ধান্ত : মির্জা ফখরুল

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সরকারের সঙ্গে সমঝোতা করে নির্বাচন কমিশন (ইসি) দেড় শ আসনে ইভিএমে ভোট গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

আজ বুধবার দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যৌথসভা শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল ইসলাম এ কথা বলেন।

ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের উদ্দেশে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘কারণ, ওরা ৩০০ আসনে ইভিএম চেয়েছে। আর ওরা (ইসি) এখন অফার করেছে দেড় শতে। একটা রফা-সলভ কম্প্রোমাইজ সরকারের সঙ্গে। তারা ৩০০, দেড় শ। কিন্তু সব রাজনৈতিক দল, এমনকি জাতীয় পার্টি পর্যন্ত গিয়ে বলে এসেছিল যে আমরা ইভিএম চাই না। কারণ, ইভিএম দিয়ে জনগণের রায় সঠিকভাবে প্রতিফলিত হবে না।’

এই নির্বাচন কমিশনও যে এই সরকারেরই একটা অঙ্গসংগঠন, আজকে তা প্রমাণিত হয়েছে বলে মন্তব্য করেন বিএনপির মহাসচিব। তিনি বলেন, ‘বর্তমান যে নির্বাচন কমিশন করা হয়েছে, যেটাকে আমরা বলি অবৈধ নির্বাচন কমিশন। কারণ, এই কমিশন গঠন করাও সঠিক পদ্ধতিতে হয়নি।’ এই নির্বাচন কমিশনের ব্যাপারে তারা একটুও ইন্টারেস্টেড না।

নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘এটা কখনোই জনগণ গ্রহণ করবে না, আমরাও গ্রহণ করছি না। এটাকে পুরোপুরিভাবে আমরা প্রত্যাখ্যান করছি।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘একটি নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া এ দেশে কোনো নির্বাচন হবে না। দলীয় সরকারের অধীন নির্বাচনে জনগণের যে রায়, সেই রায় প্রতিফলিত হবে না। সুতরাং আমরা যেটা পরিষ্কার করে বলে এসেছি, অবিলম্বে এই সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে এবং পদত্যাগ করে তাদের একটা নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। সংসদ বিলুপ্ত করতে হবে ও নতুন নির্বাচন কমিশনের পরিচালনায় একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে হবে এবং জনগণের সরকার গঠন করতে হবে। ভোট হবে সম্পূর্ণ ব্যালটে।’

গতকাল মঙ্গলবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের সভাপতিত্বে নির্বাচন কমিশনের বৈঠক শেষে ইসি সচিবালয়ের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে, অনূর্ধ্ব দেড় শ আসনে ইভিএমে নির্বাচন করা হবে। ন্যূনতম একটি আসনেও হতে পারে। সবকিছু বিচার-বিশ্লেষণ করে কমিশন এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

এর আগে মির্জা ফখরুল ইসলামের সভাপতিত্বে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনগুলোর যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় আগামী ১ সেপ্টেম্বর বিএনপির ৪৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।

মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপির জন্ম আসলে একটি ঐতিহাসিক মুহূর্তে ইতিহাসের প্রয়োজনে। ‍যখন বাংলাদেশের অন্য রাজনৈতিক দলগুলো ব্যর্থ হয়েছে এবং মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করতেই দলটি প্রতিষ্ঠা করে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান দেশের মানুষের সামনে একটা নতুন আশার আলো সৃষ্টি করতে পেরেছিলেন। অনেক চড়াই-উতরাই পেরিয়ে আজ বিএনপির বয়স ৪৪ বছর।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ১২–১৩ বছর ধরে একটা ফ্যাসিবাদী সরকার জোর করে ক্ষমতা দখল করে এ দেশের মানুষের সব আশা-আকাঙ্ক্ষাকে ধ্বংস করে দিয়ে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করে দিয়েছে। ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য এমন কোনো কাজ নেই তারা করছে না। তাই দেশের স্বাধীনতা, গণতন্ত্রকে রক্ষায় বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, রুহুল কবির রিজভী, মজিবুর রহমান সারোয়ার, খায়রুল কবির খোকন, হাবিব উন নবী খান, নেওয়াজ হালিমা, তাইফুল ইসলাম, মহানগর বিএনপির রফিকুল আলম, আমিনুল হক, যুবদলের সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের মোস্তাফিজুর রহমান, মহিলা দলের সুলতানা আহমেদ, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাদেক আহমেদ খানসহ তাঁতী দল, মৎস্যজীবী দল, শ্রমিক দল, ওলামা দল, জাসাস ও ছাত্রদলের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।