পঞ্চগড়ের আটোয়ারী মাদরাসার শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের যৌন হয়রানির অভিযোগ


প্রকাশের সময় : জুন ২০, ২০২২, ৭:০৬ অপরাহ্ণ / ৪৩২
পঞ্চগড়ের আটোয়ারী মাদরাসার শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের যৌন হয়রানির অভিযোগ

মোঃ মাজহারুল ইসলাম, পঞ্চগড় প্রতিনিধি ঃ   পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলার বলরামপুর ইউনিয়নের লীলার মেলা দাখিল মাদরাসার সহকারী মৌলভী শিক্ষক জামাল উদ্দিনের বিরুদ্ধে একাধিকবার যৌন হয়রানির অভিযোগ করা হলেও শুধু সাময়িক বরখাস্ত পর্যন্ত শাস্তি সীমাবদ্ধ থেকেছে। ওই মাদরাসাটিতে মেয়ে শিক্ষার্থীরা যৌন হয়রানির শিকার হয়ে এলেও দোষী ওই শিক্ষক রয়েছেন বহাল তবিয়তে। এ ঘটনায় মাদরাসার মৌলভী শিক্ষকের যৌন কেলেঙ্কারির ঘটনায় শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ এলাকাবাসীর মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।

ছাত্রী ও অভিভাবক সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে ওই মৌলভী শিক্ষক নানা যৌন হয়রানিমূলক কর্মকান্ড চালিয়ে আসছে। যৌন হয়রানির শিকার ছাত্রীদের লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে বেশ কয়েকবার সাময়িকভাবে বরখাস্তও হয়েছেন ওই শিক্ষক। বরখাস্তের পর এ ধরনের ঘটনার আর পুনরাবৃত্তি হবে না বলে প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমাও চেয়েছেন। কিন্তু তারপরও তার এই আচরণের পরিবর্তন হয়নি। সর্বশেষ গত ২১ মে ২০২২ ষষ্ঠ শ্রেণীর তিন ও সপ্তম শ্রেণীর দুই ছাত্রীকে যৌন হয়রানির লিখিত অভিযোগ করা হয় মাদরাসার সুপার মো. আমান উল্লাহর বরাবরে। সুপারের পক্ষ থেকে অভিযুক্ত ওই শিক্ষককে কারণ দর্শানো নোটিস প্রদান করা হলেও এখন পর্যন্ত সেই নোটিসের কোন জবাব তিনি দেননি।

সাবেক এক ছাত্রীর বাবা জানান, এর আগেও ২০১২ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর যৌন হয়রানির অভিযোগে ছয় মাস, ২০১৭ সালের ১১ এপ্রিল ছয় মাসের জন্য সাময়িকভাবে বরখাস্ত ছিলেন ওই শিক্ষক। কিন্তু মাদরাসা কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করে মাফ পেয়ে যান।

ষষ্ঠ শ্রেণীর এক ছাত্রী জানান, একাধিকবার জামাল স্যারের লালসার শিকার হতে হয়েছে তাকে। লোকলজ্জার ভয়ে বিষয়টি প্রথমে গোপন রাখি। পরে আমার মা ও মাদরাসার এক ম্যাডামকে জানাই। সপ্তম শ্রেণীর আরেক ছাত্রী জানায়, ক্লাস নেয়ার ফাঁকে জামাল স্যার অশালীন অঙ্গভঙ্গি, কুরুচিপূর্ণ কথা, শরীরে স্পর্শ কাতরে হাত দেওয়া সহ বিভিন্ন কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছেন। এসব না করতে স্যারকে নিষেধ করলে তিনি আমাদের পরীক্ষায় ফেল করে দেয়ারও হুমকি দেন। অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষক জামাল উদ্দীন তার বিরুদ্ধে সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমার বিরুদ্ধে কয়েক ছাত্রী যৌন হয়রানির যে লিখিত অভিযোগ করেছে তা অসত্য।

মাদরাসার সুপার আমান উল্লাহ বলেন, ষষ্ঠ শ্রেণীর তিন ও সপ্তম শ্রেণীর দুই ছাত্রীকে যৌন হয়রানি করার লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিস দেয়া হয়েছে। কিন্তু এ পর্যন্ত কোন জবাব পাইনি। আটোয়ারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুসফিকুল আলম হালিম বলেন, আমিও ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে দোষী প্রমাণ হলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।