অবৈধ বালু উত্তোলন প্রতিবাদ সভার ঢাক দেন তাজকীর দেওয়ান


প্রকাশের সময় : জুলাই ২৫, ২০২২, ৬:৩৩ অপরাহ্ণ / ৩৯৩
অবৈধ বালু উত্তোলন প্রতিবাদ সভার ঢাক দেন তাজকীর দেওয়ান

সাংবাদিক রাফসান আহম্মেদ (ঢাকা) শরীয়তপুর জেলার গোসাইরহাট উপজেলার কোদালপুর ও আলাওলপুর ইউনিয়নের মেঘনা নদীর চর থেকে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলনের প্রতিবাদে দুই ইউনিয়নের প্রায় ৫/৬ হাজার জনতা কে একসাথে নিয়ে প্রতিবাদ সভা ও মানববন্ধন ও সমাবেশের এর ঢাক দেন মালোশিয়া যুবলীগের আহবায়ক মোঃ তাজকীর আহমেদ দেওয়ান।

শনিবার(২৩ জুলাই ২০২২) বিকাল ৪ টায় ঐতিহ্যবাহী কোদালপুর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে যুদ্ধকালীন কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা ইকবাল আহমেদ বাচ্চু ছৈয়ালে’কে একক ভাবে সভাপতি ঘোষণা করেন তাজকীর আহমেদ দেওয়ান তিনি বলেন আমি মহান মুক্তিযুদ্ধাকে শরন করে আজকের এ-ই প্রতিবাদ সভার সভাপতি ঘোষণা করছি বীর মুক্তিযোদ্ধা ইকবাল আহমেদ বাচ্চু ছৈয়াল কে কারণ পাকিস্তানকে পরাজিত করা সৈনিক তিনি হবেন এই যুদ্ধের সভাপতি। মনিরুজ্জামান মনা দেওয়ানের সঞ্চালনায় স্থানীয় প্রায় ৫/৬ হাজার সাধারণ জনগণকে সাথে নিয়ে এই আন্দোলনের ঢাক দেন , সেই সুবাদে কোদালপুর ও আলাওলপু ইউনিয়ন এর নদী থেকে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলনের প্রতিবাদ সভায় যোগ দিয়েছেন সাধারণ জনগণ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নদীর পারের অনেক মানুষ বলেন প্রায় ৩/৪ বছর ধরে এই বালু তোলার রমরমা ব্যবসা ও মহা উৎসব চলছে, প্রথম আমার দেখেছি দুই একটি ড্রেজার চলতে এবং দিনে এবং রাতে অবৈধ ভাবে বালু কাটতো কিছু সংখ্যা খারাপ লোক, পরে দেখি ধীরে ধীরে দেখলাম প্রায় ৬/৮ টি ড্রেজার চলে আসলো তখন আমার আতঙ্কিত হয়ে পরলাম। এবং প্রায় ৩০/৪০ জন কোদালপুর ও আলাওলপুর ইউনিয়ন এর প্রভাবশালী দুষ্কৃতী কিছু মানুষ ও আসে পাশে ইউনিয়ন এর কিছু নেতা সম্মিলিত ভাবে এই অবৈধ বালু উত্তোলন সাথে সশরীরে জড়িত তারা ধীরে ধীরে ভয়ঙ্কর বালুখেকো নামে পরিচিত হয়ে যায়। এই বালু খেকো মানুষ গুলো প্রতিদিন কয়েক হাজার ফিট বালু মেঘনা নদী থেকে অবৈধ ভাবে উত্তোলন করতেছে। গোসাইরহাট উপজেলা প্রশাসন কয়েক দফায় অভিযান পরিচালনা করলেও পুনরায় বালু খেকো এসব ব্যবসায়ীরা বছরের পর বছর বালু উত্তোলন করে যাচ্ছে। আলাওলপুর ও কোদালপুরের মেঘনা নদী সংলগ্ন দুই পারে প্রায় ১২ হাজার সাধরণর কৃষকের বসবাস। নদী থেকে বালু উত্তোলন করায় প্রতি বছর কোদালপুর ও আলাওলপুরের প্রায় ৫শ থেকে ৬শ পরিবার নদী ভাঙনে ভিটে মাটি হারিয়ে নিঃশ্ব হয়ে যাচ্ছে। অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলনের ফলে সাধারণ জনগণ ভিটে মাটি হারানোর সাথে সাথে সরকার হারাচ্ছে কোটি টাকা ভ্যাট ট্যাক্স।

প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তরা বলেন, একদিকে সরকার বাংলাদেশকে ভূমিহীন মুক্ত করার লক্ষ্যে কাজ করছে অন্যদিকে ভূমিদস্যু বালু খেকোরা নদী থেকে বালু কেটে নেওয়ায় হাজার হাজার লোক ভিটে মাটি হারিয়ে ভূমিহীন নিঃশ্ব হয়ে যাচ্ছে। প্রশাসন অভিযান পরিচালনা করলে তারা আইনের ফাঁকফোকর দিয়ে বের হয়ে আবার বালু উত্তোলন করে। সমাবেশ থেকে বক্তরা রবিবার সকালে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করবেন বলে ঘোষণা দেন।

প্রতিবাদ সভায় মূল আহবান তাজকীর আহমেদ দেওয়ান জানান, আজকের সমাবেশ শেষে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও মুরব্বিদের নিয়ে আমরা মিটিং করে আরও বৃহত্তর কর্মসূচি ঘোষণা করব। এবং যাঁরা বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের নাম ভাঙ্গিয়ে অবৈধ কাজের সাথে লিপ্ত হবেন তাদেরকে একচুলও ছাড় দেয়া হবে না।
কারণ আমি বিশ্বাস করি রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা অবৈধ কাজ দুর্নীতির জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছেন। তিনি আরো বলেন দেশ না থাকলে রাজনীতি কোথায় করব তাই দেশ ও মাতৃভূমিকে রক্ষা করতে প্রয়োজনে যা যা পদক্ষেপ নেওয়া উচিত তাই নিব। তিনি সর্বশেষ একটি স্লোগান দেন “নেতা হলেও আমি শেখ হাসিনার কর্মী নেতা নাহলে আমি শেখ হাসিনার কর্মী, জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু” ।

সভাপতির বক্তব্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা ইকবাল হোসেন বাচ্চু ছৈয়াল বলেন, আমরা এখন ঐতিহাসিক কোদালপুর স্কুল মাঠে উপস্থিত, ১৯৭১ সালের ২৭ মার্চে আমরা এই মাঠে উপস্থিত হয়ে হাজার জনতা নিয়ে বাঁশের লাঠির ট্রেনিং নিয়ে দেশকে পাক হানাদার মুক্ত করেছিলাম, আমি এই মাঠে দাঁড়িয়ে আবার বাঁশের লাঠি তৈরি করে বালু চোরদের দমন করার প্রতিজ্ঞা করলাম আপনাদের সাথে নিয়ে। বালু খেকোদের সমূলে উৎখাত করবোই।

প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, কোদালপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এস এম মিজানুর রহমান, আলাওলপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ওসমান গনী বেপারী, মোতাহারুল ইসলাম বাচ্চু মোল্লা, মাকসুদুর রহমান মোল্লা, সাইফুল কাজী, খবির উদ্দিন খান, সৈয়দ মনিরুজ্জামান বছির, নুরুল ইসলাম মিয়া, মো. আনসার হাওলাদার, মো. কাঞ্চন সরদার, এস এম মনিরুজ্জামান, ফিরোজ আহমেদ দেওয়ান, রিমন মাহমুদ, মাসেক আলি শান্ত, জলিল গাজি,আক্তার হোসেন বেপারী, মেহেদী হাসান, প্রমুখ।