২০২৩ সালে নিজ দেশে ফেরার আকুতি রোহিঙ্গাদের


প্রকাশের সময় : ডিসেম্বর ৩১, ২০২২, ৮:০৮ অপরাহ্ণ / ৮২
২০২৩ সালে নিজ দেশে ফেরার আকুতি রোহিঙ্গাদের

জেলা প্রতিনিধি কক্সবাজার:- শনিবারের (৩১ ডিসেম্বর) শেষ সূর্যাস্তের মধ্য দিয়ে বিদায় নিয়েছে ২০২২ সাল। রোববার শুরু হচ্ছে ২০২৩ সাল। নতুন বছরে নিজ দেশে ফেরার যাত্রা শুরুর আকুতি জানিয়ে ক্যাম্পে সমাবেশ করেছেন রোহিঙ্গারা।

শনিবার (৩১ ডিসেম্বর) বিকেলে ‘গো হোম ক্যাম্পেইন-২০২৩’ স্লোগানে উখিয়ার কুতুপালং লম্বাশিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এ সমাবেশ করা হয়। দীর্ঘ সময়েও প্রত্যাবাসন শুরু না হওয়ায় সমাবেশে হতাশা প্রকাশ করেন রোহিঙ্গা নেতারা।

তারা বলছেন, বাংলাদেশের বোঝা হয়ে আর থাকতে চাই না। বিশ্বে সব জাতিশ্রেণির মানুষ নতুন বছরকে স্বাগত জানিয়ে আনন্দ উদযাপন করবে। কিন্তু আমাদের সেই সুযোগ নেই। আমরা তখনই আনন্দ উদযাপন করে শান্তি পাবো যখন নিজ দেশে ফিরতে পারবো। এটাই আমাদের অন্যতম দাবি।

সমাবেশে যোগ দিতে সকাল থেকে কুতুপালং, বালুখালী ও লম্বাশিয়াসহ আশপাশের ক্যাম্প থেকে খেলার মাঠে জড়ো হতে শুরু করেন রোহিঙ্গারা। সমাবেশে পুরুষের পাশাপাশি রোহিঙ্গা নারী-শিশুরা যোগ দেন।

এ সময় ‘এনাফ ইজ এনাফ, লেটস গো হোম, ২০২৩ শুড বি রোহিঙ্গা হোম এয়ার’ সংবলিত পোস্টার-প্ল্যাকার্ড হাতে দেশে ফেরার দাবি তোলেন রোহিঙ্গারা। সমাবেশে হাজারো রোহিঙ্গা অংশ নেন। রোহিঙ্গাদের অধিকার আদায় ও প্রত্যাবাসনের দাবিতে সোচ্চার রোহিঙ্গা নেতারা সমাবেশে বক্তব্য দেন।

সমাবেশে আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান রোহিঙ্গা নেতা মোহাম্মদ জোবায়ের বলেন, নতুন বছর এলে পুরো দুনিয়ার মানুষ নিজ নিজ দেশে আনন্দ উদযাপন করে। কিন্তু শরণার্থী জীবনে রোহিঙ্গাদের নতুন বছর বরণের সুযোগ নেই। সামনের দিনগুলোতে আমরা আমাদের জন্মভূমি মিয়ানমারে নতুন বছর উদযাপন করতে চাই। বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে আমাদের অনুরোধ, রোহিঙ্গাদের দেশে ফেরানোর কার্যকর ব্যবস্থা নিন। গত পাঁচ বছর ধরে শুধু চোখের পানি ফেলছি, আপনারা এসে আমাদের চোখের পানি দেখে যান।

রোহিঙ্গা নেতা মৌলভী আবদুর রহিম বলেন, নতুন বছর আসে কিন্তু রোহিঙ্গাদের দেশে ফেরার কোনো বার্তা আসে না। ২০২৩ সালে আমাদের দেশে ফেরা শুরু হোক। এটাই আমাদের প্রধান দাবি। আমরা আশা করছি, বিশ্ব সম্প্রদায় আমাদের নিজ দেশে ফেরার সুযোগ করে দেবেন।

এদিকে রোহিঙ্গাদের ‘গো হোম ক্যাম্পেইন’ শান্তিপূর্ণভাবে পালিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন ক্যাম্পে নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত ১৪ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) অধিনায়ক সৈয়দ হারুন উর রশিদ। তিনি বলেন, নতুন বছরে নতুন প্রত্যাশা নিয়ে মিয়ানমারে ফেরার দাবি জানিয়ে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করেছেন রোহিঙ্গারা।

২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর নারকীয় তাণ্ডব শুরু হলে ২৭ আগস্ট থেকে কয়েক মাসে অন্তত ৭ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসেন। এর আগে আরও কয়েক লাখ রোহিঙ্গার বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ ছিল। বর্তমানে উখিয়া ও টেকনাফে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা ৩৪টি ক্যাম্পে অবস্থান করছেন।