হেলপারের দাবি নাদিয়াকে নিয়ে হাত ছেড়ে মোটরসাইকেল চালাচ্ছিলেন সঙ্গী


প্রকাশের সময় : জানুয়ারি ২৩, ২০২৩, ৮:২৪ অপরাহ্ণ / ৮৫
হেলপারের দাবি নাদিয়াকে নিয়ে হাত ছেড়ে মোটরসাইকেল চালাচ্ছিলেন সঙ্গী

নিজস্ব প্রতিবেদক :- ঢাকা: রাজধানীর প্রগতি স্মরণিতে বাসচাপায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নাদিয়ার মৃত্যুর ঘটনায় নিজেদের দায় অস্বীকার করেছেন গ্রেফতার বাসচালক ও হেলপার। আদালতে চালক লিটন (৩৮) দাবি করেন, মাথা ব্যথা করায় গাড়িটি তিনি নিজে না চালিয়ে পরিচিত এক চালককে দিয়েছিলেন।

আর হেলপার আবুল খায়েরের দাবি, দুর্ঘটনার সময় বাসটি দাঁড়ানো ছিল। নাদিয়াকে বহনকারী মোটরসাইকেলের চালক হাত ছেড়ে ড্রাইভিং করায় সেটি পড়ে যায়। এ সময় গাড়ির পেছনের চাকায় বাইকটির ধাক্কা লাগে।
এদিন দুপুরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) ভাটারা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ আল ইমরান রাজন আসামিদের আদালতে হাজির করে ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। তবে এ সময় আদালতে আসামিদের পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না।

শুনানিকালে বিচারক আসামিদের কাছে জানতে চান তাদের কিছু বলার আছে কিনা? তখন চালক লিটন বলেন, ‘আমার মাথাব্যথা করছিল। এজন্য আমার পরিচিত ড্রাইভার আরিফকে গাড়িটি দিয়েছিলাম। পরে শুনি এ ঘটনা ঘটেছে। আমার কোনো দোষ নেই। এ ঘটনা শোনার পর আমি এক আত্মীয়ের বাসায় আশ্রয় নিয়েছিলাম। সেখান থেকে পুলিশ আমাকে ধরে নিয়ে আসে। আমি ওই ড্রাইভারকে ধরার অনুরোধ করছি। ’

অপরদিকে হেলপার আবুল খায়ের বলেন, ‘আমাদের বাসটি দাঁড়ানো ছিল। একটি লোক হাত ছেড়ে মোটরসাইকেল চালাচ্ছিলেন আর ওই মহিলাকে কী জানি দেখাচ্ছিলেন। হাতছাড়া থাকার কারণে মোটরসাইকেলটি পড়ে যায়। পরে আমাদের গাড়ির পেছনের চাকায় ধাক্কা লাগে। ’

এরপর ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দ মোস্তফা রেজা নূর দুই আসামির দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। আদেশে রিমান্ড আগামী চার কার্যদিবসে শেষ করতে হবে বলে উল্লেখ করেন বিচারক। সেই সঙ্গে আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ ধার্য করেন।

এর আগে ভাটারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এবিএম আসাদুজ্জামান জানান, নিহত নাদিয়ার বাবা জাহাঙ্গীর আলম বাদী হয়ে ভাটারা থানায় একটি মামলা করেছেন। ওই মামলায় ভিক্টর পরিবহনের ওই বাসটির চালক ও হেলপারকে আসামি করা হয়েছে।
এরপর সোমবার সকালে মিরপুর এলাকা থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করে পুলিশ। জব্দ করা হয়েছে ঘাতক বাসটিও।

রোববার (২৩ জানুয়ারি) দুপুর পৌনে ‌১টার দিকে ভাটারা এলাকায় বাসটি একটি মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দেয়। এতে মোটরসাইকেলের পেছনে থাকা নর্দার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী নাদিয়া মারা যান, আহত হন তার বন্ধু মেহেদী হাসান। নিহত নাদিয়া ওই ইউনিভার্সিটির ফার্মেসি বিভাগের প্রথম সেমিস্টারের ছাত্রী ছিলেন। তার বাড়ি নারায়গঞ্জের ফতুল্লা থানার চাষাড়ায়। এক সপ্তাহ আগে উত্তরায় একটি হোস্টেলে উঠেছিলেন তিনি।

দুর্ঘটনার পর পর কাওলা এলাকায় সড়ক অবরোধ করেন নর্দার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। নিহত নাদিয়ার পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া, ভিক্টর পরিবহনের রুট পারমিট বাতিল এবং কাওলা এলাকায় বাস স্টপেজের দাবিতে বিক্ষোভ করেন তারা। এসব দাবির বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে সন্ধ্যায় তারা সড়ক থেকে সরে যান।