সুনামগঞ্জের ৯০শতাংশ ও সিলেট ৮০ শতাংশ এলাকা পানির নিচে


প্রকাশের সময় : জুন ১৭, ২০২২, ২:০৬ অপরাহ্ণ / ৪১৩
সুনামগঞ্জের ৯০শতাংশ ও সিলেট ৮০ শতাংশ এলাকা পানির নিচে

সিলেট বিভাগের বন্যা দেশের আগের সব রেকর্ড ভেঙেছে। উজান থেকে আসা ঢলে এই বিভাগের ৮০ শতাংশ এলাকা এখন পানির নিচে। এর মধ্যে সুনামগঞ্জের ৯০ শতাংশ এলাকা ডুবে গেছে। বাকি তিন জেলার শহরের কিছু উঁচু স্থান, পাহাড়ি এলাকা এবং ভবন ছাড়া সবখানে এখন পানি। আগামী দুই দিনে এই পানি আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র বলছে, ১৯৯৮ সালের জুন মাসে সিলেট বিভাগে অনেকটা এমন বন্যা হয়েছিল। কিন্তু এর পর বেশির ভাগ বন্যা মূলত হাওর ও সুনামগঞ্জের নিম্নাঞ্চল পর্যন্ত সীমাবদ্ধ ছিল। ২০১৯ সালে সুনামগঞ্জ ও সিলেট শহরে দুই তিন দিনের জন্য হঠাৎ বন্যা হয়। কিন্তু পুরো সিলেট বিভাগের বেশির ভাগ এলাকা প্লাবিত হওয়ার মতো বন্যা হয়নি।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুজ্জামান ভুইয়া আইনের চোখকে বলেন, দেশের একটি বিভাগের প্রায় ৮০ শতাংশ ডুবে যাওয়ার মতো বন্যা এর আগে বাংলাদেশে হয়নি। সিলেটে এর আগে যত বন্যা হয়েছে, তা মূলত হাওর এলাকা ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু এবার গ্রাম, শহর ও উঁচু এলাকাও পানির নিচে চলে গেছে। আর সোমবারের আগে এই পানি নামার সম্ভাবনা কম। কারণ, উজানে আগামী দুই দিন অতিভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস আছে।

সিলেট-কোম্পানীগঞ্জ-ভোলাগঞ্জ সড়ক প্লাবিত ঢলের পানিতে। গবাদিপশু নিয়ে নিরাপদ স্থানে যাচ্ছে মানুষ। মিত্রীমহল এলাকা, গোয়াইনঘাট

সিলেট-কোম্পানীগঞ্জ-ভোলাগঞ্জ সড়ক প্লাবিত ঢলের পানিতে। গবাদিপশু নিয়ে নিরাপদ স্থানে যাচ্ছে মানুষ। মিত্রীমহল এলাকা, গোয়াইনঘাট

ইউরোপীয় ইউনিয়নের ভূ-উপগ্রহভিত্তিক সংস্থা ইসিএমডব্লিইউর পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামীকাল বাংলাদেশের উজানে ভারতের চেরাপুঞ্জিতে ৫০০ থেকে ৬০০ মিলিমিটার বৃষ্টি হবে। এর আগে গত ২৪ ঘণ্টায় সেখানে ৯৭২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে; যা ১২২ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ বৃষ্টি। আর গত তিন দিনে সেখানে প্রায় আড়াই হাজার মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এই অল্প কয়েক দিনে এত বৃষ্টির রেকর্ডও গত ১০০ বছরে নেই।

বাংলাদেশের নদী ও পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সিলেট বিভাগের সুরমা, কুশিয়ারা, গোয়াইনসহ বেশির ভাগ নদ-নদীতে পলি পড়ে অনেক এলাকা ভরাট হয়ে গেছে। নদ-নদীর বুক উঁচু হয়ে যাওয়ায় বৃষ্টির পানির ঢল ধরে রাখতে পারছে না। ফলে পানি উপচে দ্রুত বসতি ও শহর এলাকায় ছড়িয়ে পড়ছে। হাওর এলাকায় কৃষিকাজসহ নানা তৎপরতার কারণে পানি ধারণের ক্ষমতা কমে গেছে। যে কারণে বন্যার পানির উচ্চতা বেড়ে গেছে।

বসতঘর ছেড়ে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে স্বজনের বাড়িতে যাচ্ছেন আবদুল্লাহ। বর্ণি এলাকা, কোম্পানীগঞ্জ

বসতঘর ছেড়ে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে স্বজনের বাড়িতে যাচ্ছেন আবদুল্লাহ। বর্ণি এলাকা, কোম্পানীগঞ্জ

সিলেট নগরের বিভিন্ন বাসা-বাড়িতে পানি প্রবেশ ঠেকাতে ইট-সিমেন্ট-বালুর দোকানে ভিড় করছেন নগরবাসী। শুক্রবার নগরের কুয়ারপাড় এলাকায়