সংসদ নির্বাচন পুরো আসনের নয়, কেন্দ্রের ফল বাতিল-স্থগিত করতে পারবে ইসি


প্রকাশের সময় : মে ১৮, ২০২৩, ৭:৫১ অপরাহ্ণ / ৬১
সংসদ নির্বাচন  পুরো আসনের নয়, কেন্দ্রের ফল বাতিল-স্থগিত করতে পারবে ইসি

নিজস্ব প্রতিবেদক :-  কোনো নির্বাচনে পুরো আসন নয়, অনিয়ম হওয়া এক বা একাধিক কেন্দ্রের ফল বাতিল বা স্থাগিত করতে পারবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এমন বিধান রেখে ‘রিপ্রেজেনটেশন অব দ্য পিপল (অ্যামেন্ডমেন্ট) অ্যাক্ট, ২০২৩’ চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

বৃহস্পতিবার (১৮ মে) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে গণপ্রতিনিধিত্ব (সংশোধন) আইনের খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এতে সভাপতিত্ব করেন।

বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের যে কোনো মুহূর্তে পেশিশক্তি বা অন্য যে কোনো কারণে এক বা একাধিক কেন্দ্রের ফলাফল স্থগিত বা বাতিল করার ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনকে দেওয়া হয়েছে। এক বা একাধিক কেন্দ্রে অনিয়মের অভিযোগ প্রমাণিত হলে নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের ফল বাতিল করতে পারবে।’

পুরো নির্বাচন বাতিল করার কোনো প্রভিশন আইনে নেই বলেও জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

‘এখানে যে জিনিসটা রাখা হয়েছে- নির্বাচন কমিশন কোনো নির্বাচন চলাকালীন ওনাদের কাছে যদি মনে হয় যে ওই সেন্টারের নির্বাচন সমস্যা হচ্ছে, তখন তারা ওই সেন্টারের বা পোলিং স্টেশনের নির্বাচনটা; এক বা একাধিক যদি হয় সেটি তারা বাতিল বা স্থগিত করতে পারবেন। পোলিং স্টেশনের সংখ্যা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়নি। বলা হয়েছে- এক বা একাধিক।’

নির্বাচন কমিশন তো অনিয়মের কারণে পুরো আসনের নির্বাচন বাতিলের ক্ষমতা দেওয়ার প্রস্তাব করেছিল- এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের প্রস্তাব মন্ত্রিসভা পর্যালোচনা করে যে বিষয়গুলো যৌক্তিক বলে মনে করেছে, যে বিষয়গুলো নির্বাচন পরিচালনা করার ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা নিশ্চিত ও সহায়ক হবে বলে মনে করেছে, সেগুলো অনুমোদন করেছে।’

আইনটি মন্ত্রিসভায় পাস হলেও সেটি সংসদে উন্মুক্ত আলোচনা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, মাননীয় সংসদ সদস্যরা যেভাবে মনে করবেন সেভাবে হবে। সংসদীয় গণতন্ত্রের এটাই তো বড় সৌন্দর্য।

সম্প্রতি অনুষ্ঠিত গাইবান্ধার একটি আসনে পুরো নির্বাচন স্থগিত করার বিষয়ে মাহবুব হোসেন বলেন, এ বিষয়ে আমি কথা বলতে চাই না। আইনটি যেভাবে পাস হয়েছে সেটিই বলেছি।

তিনি বলেন, ‘এটাতে কিছু সংশোধনী প্রস্তাব করা হয়েছিল। আগে যেমন ছিল যেকোন ইউলিটি বিল যেদিন মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া হবে তার সাত দিন আগে জমা দিতে হতো। না হলে মনোনয়নপত্র বাতিল বলে গণ্য হতো। এখন বিলটা মনোনয়নপত্র যেদিন জমা দেবে, তার আগের দিন পর্যন্ত জমা দিতে পারবে।’

সচিব বলেন, ‘মনোনয়নপত্রের সঙ্গে টিআইএন সার্টিফিকেট সংযুক্ত করতে হবে এবং কত টাকা আয়কর জমা দিয়েছে, সেটা রশিদ অনুযায়ী সামবিট করতে হবে। এটা আগে ছিল না। এ দুটি অংশ যোগ করা হয়েছে।’

একটি নতুন ধারা যুক্ত করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, মিডিয়াকর্মীদের ওপর কেউ যদি হামলা বা তাদের আহত করেন তাহলে তিনি সুনির্দিষ্ট শাস্তির আওতায় আসবেন।

আগের আইন অনুযায়ী জেলাভিত্তিক রিটার্নিং কর্মকর্তার নিয়োগ দেওয়া হলেও এখন নতুন আইন অনুযায়ী সংসদীয় আসনভিত্তিক দায়িত্ব দেওয়া যাবে বলেও জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

তিনি বলেন, ‘মনোয়নপত্র জমা দেওয়ার পর কেউ রিজেক্ট (বাতিল) হন, তাহলে তিনি তখন আপিল করতে পারতেন। এখন শুধু রিজেক্ট না, রিটার্নিং অফিসার যে সিদ্ধান্তই দেন, যদি গ্রহণও করেন তাহলে আপিল করা যাবে। তার যেকোনো সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করা যাবে। উপযুক্ত কাগজপত্র ও সুনির্দিষ্ট প্রমাণসহ অভিযোগ দাখিল করে এই আপিল করা যাবে।’

রাজনৈতিক দলগুলোর কিছু শর্ত ২০২০ সালের মধ্যে পূরণ করার বিষয় ছিল জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘তাদের গঠনতন্ত্র জমা দেওয়া, নারী সদস্য থাকার যে বিষয়গুলো, সেটার মেয়াদ ২০৩০ সাল পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।