রিকশা চালাই তবু দুর্নীতিতে জড়াইনি: ছাত্রলীগ নেতা সোহান


প্রকাশের সময় : নভেম্বর ২০, ২০২২, ৪:৩৮ অপরাহ্ণ / ৮৮
রিকশা চালাই তবু দুর্নীতিতে জড়াইনি: ছাত্রলীগ নেতা সোহান

স্টাফ রিপোর্টার সেলিম রানা:- পাবনা জেলা ছাত্রলীগের সাবেক উপ-নাট্য বিতর্ক সম্পাদক সোহানুর রহমান সোহানের বাড়ি আমিনপুর থানার জাতসাখিনী ইউনিয়নের নটিয়াবাড়ি গ্রামে। বর্তমানে ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সহসভাপতির পদেও আছেন। বাবা-মা ও দুই বোনসহ পাঁচজনের সংসার। সংসারের হাল ধরতে সোহান পড়ালেখা বাদ দিয়ে এখন ঢাকায় রিকশা চালান। অসৎ পথে অর্থ উপার্জনের সুযোগ থাকলেও কখনো সে পথে পা বাড়াননি। তিনি চান না তার কোনো কাজের কারণে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হোক।

সোহান বলেন, আমার দাদা আওয়ামী লীগের বড় নেতা ছিলেন। তার মুখে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কথা শুনেছি। তার আদর্শ মেনেই রাজনীতি করি। রাজনীতি আমার রক্তে মিশে আছে। এটি আমার পেশা নয়, নেশা। করোনা মহামারীর সময় ঘরে খাবার ছিল না। আমার ঘরের দরজা লাগানোর জন্য বাবার জমানো টাকা চুরি করে মুজিব শতবর্ষ পালন করেছিলাম।

তিনি বলেন, ডিগ্রিতে ভর্তি হয়েও আর্থিক অনটনের কারণে আর পড়া হয়নি। জীবিকার তাগিদে ঢাকায় চলে আসি। অন্য কোনো কাজ না পেয়ে শেষমেশ রিকশা চালানো শুরু করি। প্রায় দুই বছর ধরে ঢাকার মিরপুরে রিকশা চালাচ্ছি। অনেকেই চুরি, ডাকাতি, টেন্ডারবাজি করছে। চাইলে আমিও অবৈধভাবে টাকা কামাতে পারতাম। কিন্তু তা করিনি। আমার কোনো কাজের জন্য দলের বদনাম হোক এটা কখনো চাইনি। ছাত্রলীগ বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া সংগঠন। তার আদর্শ মেনেই রাজনীতি করছি।

সোহান বলেন, আওয়ামী লীগের প্রয়াত সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেছিলেন, ছাত্রলীগ থেকে যেমন বীর সেনা তৈরি হয়, ঠিক তেমনি বেইমানও জন্ম নেয়। আওয়ামী লীগের মধ্যেও মুশতাকদের মতো লোক আছে বলেই আজ আমার মতো ছাত্রনেতা রিকশা চালাচ্ছে। আমাদের মতো নেতারা অভিমানী হয়, কখনো বেইমানি করে না। যারা রাজনীতিতে আসতে চান, তাদের বলব— পেশা হিসাবে নিলে রাজনীতিতে আসার দরকার নেই।

আক্ষেপের সুরে সোহান বলেন, পাবনা-২ আসনের সাবেক এমপি খন্দকার আজিজুল হক আরজুর অধীনে আমি রাজনীতি করেছি। আমার এই অসময়ে তাকে অসংখ্য এসএমএস দিলেও কোনো সাড়া পাইনি। আসলে আমাদের মতো ছাত্রনেতাদের সবাই ব্যবহারই করেন। আমাকে বিভিন্নজন আশ্বাস দিয়েছেন কিন্তু তা বাস্তবায়ন করেননি। এতদিন পর বুঝলাম, নিজের কাজ নিজেকেই করতে হবে। তাই রিকশা চালানো শুরু করেছি।