মেনিনগোকক্কাল ইনফেকশন


প্রকাশের সময় : নভেম্বর ৪, ২০২২, ৫:৫৫ অপরাহ্ণ / ১০৭
মেনিনগোকক্কাল ইনফেকশন

মোঃ রায়হান শরীফ, স্টাফ রিপোর্টার, রংপুর

১. মেনিনগোকক্কাল ইনফেকশন কি? মেনিনগোকক্কাল ইনফেকশন হচ্ছে Meningococcus ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সৃষ্ট যে কোনো অসুস্থতা । এই ইনফেকশন এর ফলে মেনিনজাইটিস অথবা সেন্টিসেমিয়া হতে পারে। ২. মেনিনগোকক্কাল ইনফেকশন এর কারণ কি? মেনিনগোকক্কাল ইনফেকশন মূলত নেইজেরিয়া মেনিনজাইটিভিস নামক ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সংক্রমিত হয়ে থাকে। ৩. এই ইনফেকশনের ফলে সৃষ্ট রোগগুলো কি কি? এই ইনফেকশনের ফলে সৃষ্ট রোগগুলি হচ্ছেঃ মেনিনজাইটিস মেনিনজাইটিস হচ্ছে মস্তিষ্কের মেমব্রেন এর প্রদাহ। এছাড়া এই ইনফেকশন সেরেব্রোস্পাইনাল ফ্লুইড এবং কেন্দ্রীয়ায়ুতন্ত্রে সংক্রমিত হতে পারে। এর ফলে মস্তিষ্ক এবং স্পাইনাল কর্ড এর মারাত্বক ক্ষতি হতে পারে। মেনিনগোকক্কাসেমিয়া মেনিনগোকক্কাসেমিয়া হচ্ছে রক্তের প্রদাহ যা থেকে ডিসেমিনেটেড ইন্ট্রাভাসকুলার কোয়াগুলেশন এর মত মারাত্মক অবস্থা সৃষ্ট হতে পারে। অন্যান্য মেনিনগোকক্কাল ইনফেকশন হতে নিউমোনিয়া, মায়োকার্ডিটিস, পেরিকার্ডিটিস, কনজাংটিভাইটিস ইত্যাদি রোগ হতে পারে। ৪. মেনিনগোকক্কাল রোগটি কাদের হতে পারে? মেনিনগোকক্কাল রোগটি যে কারও হতে পারে। কিন্তু এই রোগের ঝুঁকিতে সবচেয়ে বেশি থাকে • স্কুল এবং কলেজের ছাত্ররা • নবনিযুক্ত সৈনিক • স্বাস্থ্য সেবায় নিযুক্ত লোকজন • গবেষণা কাজে নিযুক্ত লোকজন কিছু রোগে আক্রান্ত লোকজন যেমনঃ-যাদের প্লীহা নেই। • যেসকল জায়গায়, মেনিনগোকক্কাল ইনফেকশন এর সংক্রমণের প্রবনতা অনেক বেশি, এমন জায়গায় ভ্রমন করলে৫. এ রোগে আপনি কিভাবে আক্রান্ত হতে পারেন? • আক্রান্ত ব্যাক্তির হাঁচি বা কাশির মাধ্যমে • আক্রান্ত ব্যাক্তির সংস্পর্শে আসলে • একই সংগে বসবাস করলে • একই গৃহস্থালী জিনিস পত্র ব্যবহার করলে • মুখের লালার মাধ্যমে • একই পাত্রে খাবার খেলে ৬. এ রোগের লক্ষণগুলি কি কি? সাধারণ লক্ষণগুলো হলো • জ্বর হওয়া, তীব্র মাথাব্যথা, মাথা ঘোরানো, বমিবমি ভাব • ধার শক্ত হয়ে যাওয়া • ফটোফোবিয়া • অস্থিসন্ধিতে ব্যথা। • মনস্তাত্বিক পরিবর্তন ৭. কত দ্রুত উপসর্গগুলো দেখা যায়? সংক্রমনের ২-৩ দিনের মধ্যে রোগের লক্ষণগুলো প্রকাশ পায়, কিন্তু সাধারনত ৫ দিনের মধ্যে দেখা যেতে পারে। ৮. এ রোগ সম্পর্কে আপনার জানা দরকার কেন? প্রতি বছর এ রোগে আক্রান্ত রোগীর ১০% রোগী মারা যায় এবং যারা বেঁচে থাকে, তাদের ২০% রোগী স্থায়ী ভাবে নানা রকম শারীরিক অক্ষমতায় ভোগে। ৯. এ রোগটির কোন চিকিৎসা আছে কি? প্রাথমিক অবস্থায় রোগটি নির্ণয় করা গেলে, উপযুক্ত এন্টিবায়োটিক এর মাধ্যমে চিকিৎসা সম্ভব। তবে এই চিকিৎসা ব্যয়বহুল এবং সময় সাপেক্ষ। ১০. এ রোগটি প্রতিরোধের উপায় কি? ভ্যাকসিন নেয়ার মাধ্যমে, মেনিনগোকক্কাল ইনফেকশন প্রতিরোধ করা যায়।১১. মেনিনগোকক্কাল ভ্যাকসিন কি নিরাপদ? মেনিনগোকক্কাল ভ্যাকসিন নিরাপদ এবং কার্যকরী সব ভ্যাকসিনের মতই সামান্য পরিমান সমস্যা থাকতে পারে। এর মধ্যে ইনজেকশনের জায়গায় ব্যথা, লাল হয়ে যাওয়া অথবা ১-২ দিন অল্প পরিমান থাকতে পারে। অ্যালার্জির মত তীব্র ক্ষতিকারক প্রভাব খুবই কম। ইনসেপটা বাংলাদেশে নিয়ে এল মেনিনগোকক্কাল মেনিনজাইটিস ইনগোভ্যাক্স মেনিনগোকক্কাল মেনিনজাইটিস প্রতিরোধে একটি কার্যকরী ভ্যাকসিন। ১২. এই ভ্যাকসিন এর ডোজ কয়টি? কত দিন পর এই ভ্যাকসিন পুনরায় নিতে হয়? ২ বছরের উর্দ্ধে ০.৫ মি.লি. এর শুধু মাত্র একটি ডোজ, যেকোন দিন। ৩ বছর পর একটি বুস্টার ডোজ নিতে হবে, যদি পুনরায় ইনফেকশনের ঝুঁকি থাকে। ১৩. গর্ভাবস্থা এবং স্তন্যদানকালে কি এই ভ্যাকসিন নেয়া যায়? গর্ভাবস্থায় এবং স্তন্যদানকালে মেনিনগোকক্কাল মেনিনজাইটিস এর ভ্যাকসিন নেওয়ার পর্যাপ্ত তথ্য জানা নেই। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী গর্ভাবস্থায় এবং স্তন্যদানকালে এই ভ্যাকসিন নেওয়া যেতে পারে।