বৃষ্টি নেই, কৃষকদের যে পরামর্শ দিলো ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট


প্রকাশের সময় : ডিসেম্বর ১৫, ২০২২, ৭:২০ অপরাহ্ণ / ৯৪
বৃষ্টি নেই, কৃষকদের যে পরামর্শ দিলো ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট

নিজস্ব প্রতিবেদক:-  আগামী সাতদিনে দেশে বৃষ্টির কোনো পূর্বাভাস নেই। আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী এসময় বৃষ্টি না হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। তাই এসময় ধান উৎপাদন ব্যবস্থাপনার বিষয়ে কিছু পরামর্শ দিয়েছে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি)।

ব্রি’র পরামর্শগুলো হলো 

বোরো ধানের বীজতলা তৈরি অব্যাহত রাখুন। বীজ ভেজানোর আগে ভালোভাবে ২-৩ ঘণ্টা রোদে শুকিয়ে নিন।

বীজতলা তৈরির ক্ষেত্রে অতিরিক্ত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা রাখতে হবে। অংকুরিত বীজতলায় ছিটানোর পর জমিতে যেন অতিরিক্ত পানি না থাকে।

এ সময় বীজতলায় থ্রিপস এবং বাদামি গাছফড়িংয়ের আক্রমণ হতে পারে। থ্রিপস আক্রান্ত চারার পাতা এক পার্শ্ব থেকে মুড়িয়ে শুই এর মতো সোজা হয়ে যায় এবং পরে শুকিয়ে যায়। সেচসহ ইউরিয়া উপরি প্রয়োগ করলে থ্রিপসের আক্রমণ কমে যায়। তবে শতকরা ২৫ ভাগ পাতা ক্ষতিগ্রস্ত হলে ম্যালাথিয়ন ৫৭ ইসি প্রতি লিটার পানিতে ২ মি.লি মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।

বাদামি গাছফড়িং এবং গ্রিন মিরিড বাগের সহাবস্থান থাকলে মিরিডবাগ, বাদামি গাছফড়িংয়ের ডিম প্রাকৃতিকভাবে নষ্ট করে ফেলবে। তবে মিরিডবাগ না থাকলে বাদামি গাছফড়িং দেখামাত্রই দমনের ব্যবস্থা নিতে হবে।

এক বিঘা জমিতে চারা রোপণ করার জন্য ১২৫ সেমি প্রস্থ, ১০ মিটার দৈর্ঘ্য ও দুটি বিছানার মধ্যে ৩০ সেমি ফাঁক দিয়ে ছয় থেকে আটটি সমতল বীজতলা প্রস্তুত করতে হবে। এক বিঘা জমিতে চারা রোপণ করার জন্য প্রায় ৫ কেজি বীজ প্রয়োজন।

বীজ সম্ভাব্য বৃদ্ধির পর্যায়ে থাকলে, চারা গাছ হলদে হয়ে গেলে প্রতি বর্গ মিটারে ৭ গ্রাম ইউরিয়া সার উপরি প্রয়োগ করতে হবে। ইউরিয়া প্রয়োগের পর চারা সুবজ না হলে সালফারের অভাব হয়েছে বলে ধরে নেওয়া যায়। তখন প্রতি বর্গ মিটারে ১০ গ্রাম জিলাম সার উপরি প্রয়োগ করতে হবে। ইউরিয়া সার উপরি প্রয়োগের পর বীজ তলায় পানি ধরে রাখা উচিত।

বীজ বপনের পর ৪-৫ দিন পানি দ্বারা নালা ভর্তি করে রাখা উচিত। এতে মাটি নরম থাকে, গজানো বীজ নষ্ট হয় না এবং বীজতলা শুকায় না। ৪-৫ দিন পর ছিপছিপে পানি রাখলে বাড়-বাড়তি ভালো হয়। চারা বৃদ্ধির সাথে সমন্বয় রেখে পানির পরিমাণ বাড়ানো যায়। বেশি পানি রাখলে চারা লম্বা ও দুর্বল হয়।

চারা অবস্থায় বীজ তলায় থ্রিপস, সবুজ পাতাফড়িং এবং বাদামি গাছফড়িংয়ে আক্রমণ হতে পারে। থ্রিপস আক্রান্ত চারার পাতা একপাশ থেকে মুড়িয়ে শুই এর মতো সোজা হয়ে যায় এবং পরে শুকিয়ে যায়। সেচসহ ইউরিয়া উপরি প্রয়োগ করলে থ্রিপসের আক্রমণ কমে যায়। তবে শতকরা ২৫ ভাগ পাতা ক্ষতিগ্রস্ত হলে ম্যালাথিয়ন৫৭ ইসি প্রতি লিটার পানিতে ২ মি.লি মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে। বীজতলার আশপাশের জমিতে টুংরো রোগের উপস্থিতি দেখা গেলে সবুজ পাতাফড়িং হাতজাল বা কীটনাশক প্রয়োগের মাধ্যমে দমন করতে হবে।

এছাড়া কোনো এলাকায় তীব্র শীত হলে বীজতলায় ৩-৫ সেন্টিমিটার পানি ধরে রাখা এবং স্বচ্ছ পলিথিনের ছাউনি দিয়ে বীজতলা ঢেকে রাখতে হবে। শৈত্যপ্রবাহের সময় বীজতলা স্বচ্ছ পলিথিন দিয়ে সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ঢেকে দিলে, বীজতলায় পানি সকালে বের করে দিয়ে আবার নতুন পানি দিলে, প্রতিদিন সকালে চারার উপর জমাকৃত শিশির ঝরিয়ে দিলে চারা ঠান্ডার প্রকোপ থেকে রক্ষা পায় এবং স্বাভাবিকভাবে বাড়তে পারে।

এছাড়া প্রয়োজনীয় সাহায্য ও পরামর্শের জন্য নিকটবর্তী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দিয়েছে ব্রি।