বিক্ষোভ সমাবেশের ঘোষণা ৪ ফেব্রুয়ারি গণতন্ত্র মঞ্চের


প্রকাশের সময় : জানুয়ারি ২৫, ২০২৩, ৫:৫৪ অপরাহ্ণ / ৯৬
বিক্ষোভ সমাবেশের ঘোষণা ৪ ফেব্রুয়ারি গণতন্ত্র মঞ্চের

নিজস্ব প্রতিবেদক :- ঢাকা: গ্যাস, তেল, বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদ ও সব রাজবন্দিদের মুক্তির দাবিতে ৪ ফেব্রুয়ারি রাজধানীসহ সারাদেশে বিক্ষোভ সমাবেশের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে গণতন্ত্র মঞ্চের পক্ষ থেকে।

বুধবার (২৫ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ‘সরকার ও শাসনব্যবস্থা পরিবর্তনের লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধ হোন ১৪ দফা কর্মসূচির ভিত্তিতে যুগপৎ আন্দোলন জোরদার করুন’ শিরোনামে গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে গণতন্ত্র মঞ্চের আয়োজিত সমাবেশ শেষে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না এ ঘোষণা দেন।

সভাপতির বক্তব্যে মান্না বলেন, আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাঘে ধান খাওয়ার মতো স্বীকার করেছেন, র‍্যাব মানুষ মেরেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কথাবার্তা বলেছি, অবস্থা ঠিকঠাক হয়ে গেছে। এখন থেকে নিষেধাজ্ঞা উঠে যাবে। অথচ যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস বিবৃতি দিয়েছে, এমন কোনো কথা তাদের সাথে হয়নি।

তিনি বলেন, এই সরকার এখন ভিক্ষা করার জন্য একবার আইএমএফের কাছে যায়, একবার ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের কাছে যায়, একবার এডিবির কাছে যায়। অন্যের কাছে ভিক্ষা করা ছাড়া এই সরকারের এখন বাঁচার কোনো উপায় নেই।

তিনি আরো বলেন, একটা কর্মসূচির পর আরেক কর্মসূচি আছে। আমরা আসি যাই আবার আসি। কিন্তু প্রত্যেকটি কর্মসূচিই একটির চেয়ে আরেকটি শক্তিশালী। আরও শক্তি সঞ্চার করে আমরা আগামীতে আবারও রাস্তায় নামবো।

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, তিন মিনিটে আজকের এদিনে জাতীয় সংসদে বাকশাল গঠনের আইন প্রণয়ন করা হয়েছিল। কোনো আলোচনার সুযোগ দেওয়া হয়নি। রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করে তিনটি দলকে সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। চারটি সংবাদপত্র ছাড়া সব গণমাধ্যমকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। ১৯৭৫ সালের এদিনে বাকশাল গঠনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের প্রথম রাজনৈতিক পরাজয় ঘটে। ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর দিনের ভোট রাতে করার মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগের দ্বিতীয় রাজনৈতিক মৃত্যু ঘটে।

তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ গণতান্ত্রিক ধারার রাজনৈতিক দল থেকে তারা আজকে জঙ্গিবাদী মতাদর্শের মাধ্যমে পরিচালিত। জঙ্গিরা যেমন মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকারে বিশ্বাস করে না, মুক্ত গণমাধ্যমে বিশ্বাস করে না, মানুষের বাক স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না, তেমনি আওয়ামী লীগ দমন করে রোধ করে একটা অনিশ্চয়তার দিকে দেশকে ঠেলে দিয়েছে। এভাবে আওয়ামী লীগ চার বছর ধরে তার তৃতীয় রাজনৈতিক মৃত্যুর জমিন তৈরি করেছে।

সমাবেশে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, নব্বইয়ের দশক থেকে বিভিন্ন দেশে কর্তৃত্ববাদের চর্চা করা হয়েছে। যেখানে নির্বাচন মোড়ক আকারে থাকবে। নির্বাচন নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকবেন, প্রার্থী বাছাই হবে এমন কী টেলিভিশনে তা নিয়ে ডিবেট হবে। কিন্তু ভোটের দিন মানুষ নির্ধারণ করবে না যে কে নির্বাচিত হবে। বরং যারা ক্ষমতায় আছেন তারা নির্ধারণ করবে যে কারা ক্ষমতা পাবেন৷ যা আওয়ামী লীগ ১৮ সালে করেছে এবং এখন বাজারে কথা শুনতে পাই যে, তারা বলেছেন আসেন আপনারা আমরা সিট ভাগাভাগি করি। এটা হচ্ছে কর্তৃত্ববাদের মডেল।

গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নুর বলেন, যারা দেশ ও দেশের মানুষের জন্য নিজের জীবনকে উৎসর্গ করে জীবন দিয়েছেন, তারাও এ রকম একটা রাষ্ট্র দেখতে চায়নি। আজকে মুক্তিযুদ্ধের কথা বলে আওয়ামী লীগ যে প্রীতি নিতে চাচ্ছে সেটা তারা নিজেরাই ধ্বংস করছেন। আওয়ামী লীগের হাত থেকে আমাদের দেশ ও দেশের মুক্তি ছিনিয়ে আনতে হবে।

সমাবেশের সভাপতিত্ব করেন নাগরিক ঐক্য আহ্বায়ক মাহমুদ রহমান মান্না।

সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম বাবলু, জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন প্রমুখ।