প্রতিবন্ধী ব্যক্তির ভাতা ৫ হাজার টাকা করার দাবি


প্রকাশের সময় : জুন ৭, ২০২৩, ৭:৩১ অপরাহ্ণ / ৮২
প্রতিবন্ধী ব্যক্তির ভাতা ৫ হাজার টাকা করার দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক :- ঢাকা: ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে প্রতিবন্ধী ব্যক্তির ভাতা মাসিক ন্যূনতম পাঁচ হাজার টাকা এবং শিক্ষা উপবৃত্তি মাসিক দুই হাজার টাকা অন্তর্ভুক্ত করাসহ ১১ দফা দাবি জানিয়েছে সংক্ষুব্ধ প্রতিবন্ধী নাগরিক সমাজ।

বুধবার (৭ জুন) সার্কেলে রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের মাওলানা মোহাম্মদ আকরাম খাঁ হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন থেকে এ দাবি জানায় সংগঠনটি।

সংক্ষুব্ধ প্রতিবন্ধী নাগরিক সমাজের অন্যান্য দাবিগুলো হলো:

প্রতিবন্ধী মানুষের সরকারি চাকরিতে নিয়োগে বিশেষ নীতিমালা (কোটা) প্রণয়ন করা; চলতি বাজেটেই বাংলাদেশ ব্যাংকে এক হাজার কোটি টাকার প্রতিবন্ধী ব্যক্তি উদ্যোক্তা তহবিল গঠন করা; অনতিবিলম্বে প্রতিবন্ধী ব্যক্তি উন্নয়ন অধিদপ্তরকে কার্যকর করা; বাংলা ইশারা ভাষা ইনস্টিটিউট প্রণয়ন এবং দেশের ৬৪ জেলার সাধারণ বিদ্যালয়ে বাংলা ইশারা ভাষাযুক্ত সমন্বিত শিক্ষাকার্যক্রম চালু ও আদালতসহ সব সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানে বিনামূলো বাংলা ইশারা ভাষার দোভাষী সেবা নিশ্চিত করা।

এছাড়া শিক্ষা ও চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় অভিন্ন জাতীয় শ্রুতিলেখক নীতিমালা করা; নিরন্ন, শ্রমজীবী মেহনতি প্রতিবন্ধী মানুষদের একটি বাড়ি একটি খামার ও আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে আত্মনির্ভরশীল করা; অটিস্টিক, বুদ্ধিসহ গুরুতর প্রতিবন্ধী মানুষদের জন্য স্বাস্থ্য ও কেয়ারগিভার ভাতা চালু করা; প্রবেশগম্য অবকাঠামো এবং গণপরিবহন নিশ্চিতে সুনির্দিষ্ট অর্থ বরাদ্দ করা; ইউনিয়ন পরিষদ থেকে জাতীয় সংসদ, স্থানীয় থেকে জাতীয় সব পর্যায়ে প্রতিবন্ধী মানুষের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা এবং মন্ত্রণালয়ভিত্তিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তি সংবেদনশীল বাজেট তৈরি করা।

সংবাদ সম্মেলনে সংক্ষুব্ধ প্রতিবন্ধী নাগরিক সমাজের সভাপতি সাবরিনা সুলতানা বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে আমাদের দাবি সরকারকে জানিয়ে আসছি, কিন্তু বরাবরের মতোই আমাদের দাবি-দাওয়ার কোন প্রতিফলন ২০২৩-২৪ বাজেটেও ঘটেনি। এর আগে আমরা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ঘেরাও ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করি। এ কর্মসূচিতে সারা দেশের ক্ষুব্ধ প্রতিবন্ধী নাগরিকরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নেন এবং সমর্থন জানান।

তিনি বলেন, আপনারা দেখেছেন, আমাদের সমাবেশ শেষে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় অভিমুখী মিছিলে পুলিশ বাধা দেয় এবং প্রতিবন্ধী মানুষদের ওপর লাঠিচার্জ করে। পুলিশের নির্যাতনে আন্দোলনকারী তিন প্রতিবন্ধী হাসপাতালে ভর্তি হয়, পুলিশের লাথি দিয়ে একাধিক হুইলচেয়ার ব্যবহারকারী মানুষকে ফেলে দেয় এবং একজনের হুইলচেয়ার ভেঙে দেয়। আমাদের ন্যায্যবিচারের এ আন্দোলনে পুলিশের নির্মম নির্যাতনের তীব্র নিন্দা ও নির্যাতনকারী পুলিশ সদস্যদের বিচার দাবি করছি।

তিনি আরও বলেন, গণপরিবহন ব্যবহার সম্ভব না হওয়ায় গুরুতর মাত্রার প্রতিবন্ধী অনেককে কোথাও যাতায়াতেই বিপুল অর্থ খরচ করতে হয়। কেবল তাই নয়, গুরুতর, বহুমাত্রিক ও অটিস্টিক বুদ্ধি প্রতিবন্ধীসহ সব ধরনের প্রতিবন্ধী মানুষ যাদের নিয়মিত ব্যয়বহুল স্বাস্থ্যসেবার দ্বারস্থ হতে হয়। তাদের অনেকেই স্বাস্থ্যভাতা এবং ব্যক্তিগত সহকারী ছাড়া চলতে পারেন না, তাদের ক্ষেত্রে চলতি বাজেট থেকেই কেয়ার গিভার ভাতা দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি আমরা।

তিনি বলেন, গত কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশে শিশু ও নারী সংবেদনশীল বাজেট তৈরি হচ্ছে। অথচ, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিবান্ধব বাজেট তৈরির দাবি জানিয়ে আসছে। এভাবে বাজেট তৈরি না হওয়ায় প্রকৃত অর্থে প্রতিবন্ধী মানুষের কোন উন্নতিই হচ্ছে না। তাই আমরা, সম্ভব হলে এবার থেকেই মন্ত্রণালয়ভিত্তিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তি সংবেদনশীল বাজেটের জোর দাবি জানাচ্ছি।