পিস্তল হাতে ভিডিও বার্তা স্বীকার করে ৪ রোহিঙ্গা হত্যার কথা


প্রকাশের সময় : সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২২, ১০:১৯ অপরাহ্ণ / ১৬৬
পিস্তল হাতে ভিডিও বার্তা স্বীকার করে ৪ রোহিঙ্গা হত্যার কথা

কক্সবাজারের উখিয়ার আশ্রয়শিবিরের রোহিঙ্গা দাবি করে মোহাম্মদ হাশিম নামের এক তরুণ ভিডিও বার্তায় চারজন রোহিঙ্গাকে হত্যার দায় স্বীকার করেছেন। ওই তরুণ বলেন, অন্যের প্ররোচনায় ও টাকার বিনিময়ে নিজেদের গোষ্ঠীর (রোহিঙ্গা) লোকজনকে গুলি করে হত্যা করা ঠিক কাজ হয়নি। এ জন্য দোষ স্বীকার করে ভিডিও বার্তায় তিনি জাতিগোষ্ঠীর কাছে ক্ষমাও চেয়েছেন।

বুধবার দুপুরে ওই তরুণের ভিডিও বার্তাটি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে তোলপাড় শুরু হয়। তৎপর হয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ওই তরুণের খোঁজে বিকেল থেকে মাঠে নামেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ আলী আইনের চোখকে বলেন, ভিডিওটি সম্ভবত রাতে ধারণ করা। ভিডিওতে যাঁদের নাম এসেছে, তাঁদের পরিচয় শনাক্তসহ হাশিম নামের ওই তরুণকে আটকের চেষ্টা চলছে।

রোহিঙ্গাদের আঞ্চলিক ভাষায় ধারণ করা ওই ভিডিওতে মোহাম্মদ হাশিম এক হাতে পিস্তল প্রদর্শন করে প্রথমে সবাইকে সালাম দেন। তারপর নিজের পরিচয় দিয়ে বলেন, ‘আঁর নাম মোহাম্মদ হাশিম, বাপন (বাবা) নাম মৃত আবদু জব্বর, আঁই (আমি) বুচিডং অর (মিয়ানমার রাখাইন রাজ্যের) কোয়ানচিমং পাড়ার। বাংলাদেশত হইলদে (আছি) ক্যাম্প-১৮, ব্লক-ইস্ট-৩। মাঝি আবদুল জব্বার।’

তারপর হাশিম বলেন, ক্যাম্প-১৮–এর ২৫ জন রোহিঙ্গা তরুণ-যুবককে ২৫টি পিস্তল দেওয়া হয়। তাঁদের পিস্তল দিয়েছে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী গ্রুপ ইসলামি মাহাসের জিম্মাদার সাহাব উদ্দিন, রহমত উল্লাহ, হেড মাঝি ভূঁইয়া, মৌলভি রফিক। এই চারজন ওই সংগঠনের নেতৃত্ব দেন।

ভিডিও বার্তায় বলা হয়, ইসলামি মাহাসের কাজ হলো হত্যার মিশন বাস্তবায়ন করা। মানুষ হত্যার জন্য ২৫ জন রোহিঙ্গা তরুণকে দেওয়া হয় মোটা অঙ্কের টাকা। তরুণদের মূল কাজ ছিল যাঁরা প্রত্যাবাসন নিয়ে কাজ করেন, তাঁদের হত্যা করা। গত ৫-৬ দিনের মধ্যে তাঁরা (তরুণেরা) তিন মাঝিসহ এক স্বেচ্ছাসেবককে হত্যা করেছেন।
ভিডিও বার্তায় হত্যার শিকার রোহিঙ্গা মাঝিদের নামও বলেন মোহাম্মদ হাশিম। তাঁরা হলেন ১৮ নম্বর ক্যাম্পের হেড মাঝি জাফর, ৭ নম্বর ক্যাম্পের ইসমাঈল, কুতুপালং সম্প্রসারিত ক্যাম্প-৪ এইচ ব্লকের এরশাদ ও হেড মাঝি আজিমুল্লাহ। মোহাম্মদ হাশিম নিজেকে ইসলামি মাহাসের সদস্য বলে পরিচয় দেন।

ভিডিওতে মোহাম্মদ হাশিমকে বলতে দেখা যায়, তাঁদের সামনে আরও বড় মিশন ছিল। কিন্তু তিনি নিজের ভুল বুঝতে পেরেছেন। তাই এই খারাপ জগৎ ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে চান।