পিরোজপুরে খালাতো ভাইকে হত্যার দায়ে যুবকের যাবজ্জীবন


প্রকাশের সময় : নভেম্বর ২৯, ২০২২, ৫:৫১ অপরাহ্ণ / ৮৪
পিরোজপুরে খালাতো ভাইকে হত্যার দায়ে যুবকের যাবজ্জীবন

জেলা প্রতিনিধি পিরোজপুর:- পিরোজপুরের নেছারাবাদে খালাতো ভাইকে হত্যার দায়ে মো. তরিকুল ইসলাম (২৮) নামে এক যুবককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন। একইসঙ্গে মরদেহ গোপন করার অপরাধে আরও সাত বছরের কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন আদালত।

মঙ্গলবার (২৯ নভেম্বর) দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মুহা. মুহিদুজ্জামান আসামির উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন।

দণ্ডপ্রাপ্ত তরিকুল ইসলাম পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলার উত্তর করফা গ্রামের মো. বাদশা মিয়ার ছেলে।

মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালের ২৩ মে সন্ধ্যা ৭টার দিকে আসামি তরিকুল তার বোনকে পড়ানোর কথা বলে তার খালাতো ভাই আবু জাফরকে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে যান। অনেক রাত হলেও বাড়ি না ফিরায় জাফরের বাবা মো. আব্দুল জব্বার খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। এসময় তরিকুলের বাবা মো. বাদশা মিয়া জানায় তরিকুল ও আবু জাফর দুজনে অনেক আগেই বাসা থেকে বেড়িয়েছে। এ ঘটনায় আবু জাফরের বাবা মো. আব্দুল জব্বার ২৪ মে নেছারাবাদ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। তবে তিনি ও পুলিশ খোঁজাখুঁজি করেও তাদের খুঁজে পায়নি।

এ ঘটনার প্রায় সাত মাস পর ২০১৬ সালের ২৩ ডিসেম্বর আবু জাফরের বাড়ির পাশের মালেক ব্যাপারীর বাগানের পরিত্যক্ত পুকুরে সেচ দিয়ে মাছ ধরার সময় মো. জামাল নামে এক ব্যক্তি মানুষের শরীরের হাড় খুঁজে পায়। খবর পেয়ে নেছারাবাদ থানার পুলিশ কঙ্কাল উদ্ধার করে। এরপর মো. আব্দুল জব্বারের সঙ্গে কঙ্কালের ডিএনএ পরীক্ষা করেন। ২০১৭ সালের ৬ মার্চ ডিএনএ পরীক্ষার রিপোর্ট পেলে তাতে মিল পাওয়া যায়। এ ঘটনায় আবু জাফরের বাবা মো. আব্দুল জব্বার ২০১৭ সালের ২ মে মো. তরিকুল ইসলাম ও তার বাবা মো. বাদশা মিয়াকে আসামি করে নেছারাবাদ থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলার তদন্ত শেষে ২০১৮ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি নেছারাবাদ থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) মো. আলমগীর হোসেন ১ নম্বর আসামি মো. তরিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ পত্র জমা দেন।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) খান মো. আলাউদ্দিন বলেন, মামলায় ১৯ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আদালত এ রায় ঘোষণা করেন। এ মামলায় মো. তরিকুল ইসলামকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং মরদেহ গোপন করার অপরাধে আরও সাত বছরের কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

আসামি পক্ষের আইনজীবী মো. শাহজাহান সরদার বলেন, আমরা আদালতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তবে এ রায়ের বিরুদ্ধে আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করবো।