পালিয়ে যাওয়া মেয়ের ..প্রতি বাবার চিঠি


প্রকাশের সময় : জুন ১৭, ২০২২, ১:৪৯ অপরাহ্ণ / ৪০২
পালিয়ে যাওয়া মেয়ের ..প্রতি বাবার চিঠি

মা’রে!
শুরুটা কিভাবে করবো বুজে উঠতে পারছিলাম না। যেদিন তুই তোর মায়ের অস্তিত্ব ছেড়ে ভূমিষ্ঠ হয়েছিলি সেদিন থেকে তোকে মা বলে ডাকতে শুরু করলাম। তোকে মা ডাকতে গিয়ে আমার নিজের মা হারানোর ব্যাথাটা’ই ভুলে গিয়েছিলাম। তোর মা ও তোকে মা ছাড়া অন্য নামে কখনো ডাকেনি। বিদ্যালয়ে প্রথম দিন,
শিক্ষক তোর নাম জিজ্ঞেস করেছিলেন। তোকে মা বলে ডাকতে ডাকতে তোর ডাক নামটাও ভুলে গিয়েছিলাম। আমি তোর নাম বলতে না পারায় সবাই আমাকে নিয়ে হাসতে ছিলো..

তাই চিঠির উপরে তোর নামের জাগায় মা লিখেছি। হঠাৎ করে তুই এভাবে চলে যাবি আমি তা বুজতেই পারিনি…!
ছেলেটা যেদিন বাইরে ব্যাগ হাতে তোর জন্য অপেক্ষা করছিল,
কখন তুই দরজা খুলেবাইরে বের হয়ে আসবি। আমি তখন ভেতরে বসে রবের কাছে প্রার্থনা করছিলাম আর ভাবছিলাম, আর কতটা ভালবাসতে পারলে তুই আমাকে ছেড়ে চলে যাবি না। অপরদিকে তুই ঘরে বসে ভাবছিলি আজ
যেতে না পারলে ছেলেটার কাছে ছোট হয়ে যাবি।
আর আমি ভাবছিলাম তুই চলে গেলে সমস্ত পিতৃজাতীর কাছে কি করে মুখ দেখাব…!
জানিস মা তুই তোর তিন বছরের ভালবাসা খুজে পেয়েছিস…..!
কিন্তু আমার জীবন থেকে বিশ বছরের ভালবাসা হারিয়ে গেছে….
মা’রে প্রত্যেকটা বাবা জানে রক্ত পানি করে গড়ে তোলা মেয়েটা একদিন অন্যের ঘরে চলে যাবে../
তারপরও একটুও কৃপণতা থাকেনা বাবাদের ভেতরে,,
বাবাদের_ভালবাসা_শামুকের_খোলসের_মতো
মা-রে!
বাবাদের ,বাহিরটা শক্ত হলেও ভেতরটা কিন্তু খুব নরম হয়ে থাকে।
বাবারা সন্তানদের কতটা ভালবাসে তা বুঝাতে পারেনা,
তবে অনেকটা ভালবাসতে পারে।
জানি মা আমার লেখাগুলো পড়ে তোর খারাপ লাগতে পারে।
কি করবো বল________???
তোরা তো যৌবনে পা রাখার পর চোখ, নাক, কান সবকিছুর প্রতি বিবেচনা না করেই প্রেম করিস।
কিন্তু যেদিন জানতে পারলাম তুই তোর মায়ের গর্ভে অবস্থান করেছিস, সেদিন বুজতে পারিনি তুই কালো না ফর্সা হবি,ল্যাংড়া না বোবা হবি,কোন কিছুর অপেক্ষা না করেই
তোর_প্রেমে_পরেছিলাম
তাই এতকিছু লিখলাম।
আমি জানি মা,,, তোদের_সব_সন্তানদের_একটা_প্রশ্ন ??
বাবারা কেন তোদের ভালো লাগাটাকে সহজে মানতে চায় না।
উত্তর টা তোর ঘাড়ে তোলা থাকলো, তুই যেদিন মা হবি সেদিন নিজে নিজে উত্তর টা পেয়ে যাবি..,,
তোরা যখন একটা ছেলের হাত ধরে পালিয়ে যাস তখন ওই ছেলে ছাড়া জীবনে কারও প্রয়োজন বোধ করিস না।
কিন্তু একটা বাবা বুঝে তার জীবনে নিজের মেয়েটার কতটা প্রয়োজন..!
যেদিন তোর দাদুর কাছ থেকে তোর মাকে গ্রহন করেছিলাম,
সেদিন প্রতিজ্ঞা করেছিলাম যে,
যদি মেয়ে হয় তাহলে,
মেয়েটাকে তার স্বামীর হাতে
নিজের হাতে তুলে দিয়ে
তবে’ই দায়িত্ব থেকে নিজেকে হালকা করবো।
তাই তোর প্রতি এত অভিমান।
মারে বাবার উপর রাগ করিসনা..!
তোরা যদি অল্প দিনের ভালবাসার জন্য ঘর ছেড়ে পালাতে পারিস,
তবে আমরা বিশ বছরের ভালবাসার জন্য বেপরোয়া হব না কেন??
বাবারা মেয়ে সন্তানের জন্মের পর চিন্তা করতে থাকে নিজের মেয়েটাকে সুপাত্রের হাতে তুলে দিতে পারবে তো।
তারা যৌবনে পা রাখার পর চিন্তা করে কোন প্রতারনার ফাঁদে পরে পালিয়ে যাবে না তো!
তাই মেয়েদের প্রতি প্রত্যেকটা বাবার এতটা নজরদারী থাকে।
যদি মন কাঁদে…..
চলে আসিস….!
বুক পেতে দেব……..!
ঠিক আগে যেভাবে ভালো বেসেছিলাম………
সেভাবেই বাসবো……..!
অপেক্ষায় “””””” থাকলাম ”””’
হয়তো তোর মায়ের মতো তোকে পেটে ধরিনি, তবে
পিঠে ধরার যন্ত্রণাটা সহ্য করতে পারছিনা। খুব।কষ্ট হচ্ছে রে…
খুব কষ্ট হচ্ছে………!

ইতি
তোর জন্মদাতা “পিতা”

সংগৃহীত