পলাশে কিশোরকে চারদিন আটক রেখে নির্যাতনের অভিযোগ


প্রকাশের সময় : অক্টোবর ৩০, ২০২২, ৬:১৪ অপরাহ্ণ / ৮১
পলাশে কিশোরকে চারদিন আটক রেখে নির্যাতনের অভিযোগ
নরসিংদীর পালাশ প্রতিনিধিঃ
নরসিংদীর পলাশে তুচ্ছ ঘটনায় আসিফ মিয়া (১৫) নামে এক কিশোরকে চারদিন ঘরে আটক রেখে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় গত শুক্রবার সকালে নির্যাতিত কিশোরের বড় ভাই আব্দুল্লাহ দুই জনকে অভিযুক্ত করে পলাশ থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।এর আগে ২৩ অক্টোবর রোববার সকাল থেকে ২৬ অক্টোবর বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত
গজারিয়া ইউনিয়নের সরকারচর গ্রামের সুলতান মিয়ার মুরগির খামারে আটকে রেখে ওই কিশোরের ওপর নির্যাতন চালানো হয়।নির্যাতনের শিকার আসিফ মিয়া উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের জয়পুরা গ্রামের মৃত আবুল হোসেনের ছেলে। সে পলাশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।নির্যাতিত কিশোর আসিফ মিয়া বলেন, নাছির ভাইয়ের ডাকে আসতে একটু দেরি হওয়ায় আসামাত্র তিনি আমাকে চড়থাপ্পর মারতে থাকেন। এসময় আমি আর কাজ করবো না বলা মাত্রই তিনি আমার গলা চেপে ধরে গলায় দা চালিয়ে হত্যার চেষ্টা চালায়।
আর বলতে থাকেন তোরে গলা কেটে মাইরা লাইলেও আমার কিচ্ছু হইতো না। এরপর আমি অজ্ঞান হয়ে গেলে আমাকে ওই ঘরেই তালাবদ্ধ করে রেখে দেওয়া হয়। জ্ঞান ফেরার পর দেখি ঘরের বাহির থেকে তালা দেওয়া। পরে নাছির মিয়ার বড় ভাই সুলতান মিয়া খামারে আসেন। আমি তখন গলার ব্যথায় কথা বলতে পারছিলাম না।
তবুও অনেক কান্নাকাটি করে আমাকে হাসপাতাল নিয়ে যেতে বললেও আমাকে হাসপাতাল না নিয়ে উল্টো ভয় দেখাতে থাকেন। আমি এই ঘটনা কাউকে জানালে আমাকে মেরে ফেলবে বলে হুমকি দেয়। এভাবে বুধবার পর্যন্ত আমাকে আটকে রেখে বিভিন্নভাবে নির্যাতন করাসহ ভয়ভীতি দেখাতে থাকেন।
একপর্যায়ে বুধবার সন্ধ্যার দিকে প্র¯্রাব করতে যাবো বলে বের হয়েই আমি কৌশলে দৌড়ে বাড়িতে গিয়ে পরিবারের সদস্যদের কাছে ঘটনাটি জানালে তারা আমাকে হাসপাতালে এনে ভর্তি করেন।নির্যাতিত কিশোরের বড় ভাই আব্দুল্লাহ জানান, এই ঘটনায় অভিযোগ দেওয়ার পর থেকেই অভিযোগ তুলে নেওয়ার জন্য সুলতান মিয়া ও তার ছোট ভাই নাছির মিয়া আমাদেরকে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে।
অভিযোগ তুলে না নিলে আমাদের দুই ভাইকে মেরে বিলের কচুরিপানার ভিতরে ঢুকিয়ে দিবে বলেও হুমকি দিচ্ছে। তারা স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তি হওয়ায় থানায় অভিযোগ দেওয়ার তিন দিন পরও আইনি সহযোগিতাসহ কোনো বিচার পাচ্ছে না বলেও ক্ষোভ প্রকাশ করেন আব্দুল্লাহ।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত সুলতান মিয়ার মুঠোফোনে কল দিলে তিনি অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করে বলেন, ঘটনার দিন আসিফের সাথে আমার ছোট ভাই নাছিরের কথা কাটাকাটির হওয়ার একপর্যায়ে ধাক্কা লাগলে আসিফ পড়ে গিয়ে টিনের বেড়ায় লেগে তার গলা কিছুটা কেটে যায়।
এছাড়া তাকে আর কোনো মারধর করা হয়নি।পলাশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ইলিয়াছ বলেন, আমি শনিবার রাতে কিশোর আসিফ মিয়াকে নির্যাতনের ঘটনাটি শোনার পর হাসপাতালে পুলিশ পাঠিয়েছি। তবে এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ভুক্তভোগী কিশোর আসিফ মিয়ার গলায় ও শরীরের বিভিন্ন অংশে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।