নারীর যোগ্যতার প্রশংসা


প্রকাশের সময় : ডিসেম্বর ৩১, ২০২২, ১০:৩১ অপরাহ্ণ / ১০৩
নারীর যোগ্যতার প্রশংসা
নারীর_যোগ্যতার_প্রশংসায়_হীনমন্যতা_থাকা_উচিত_নয়।
নারী কন্যা, জায়া,জননী। নারী তার কর্মে সর্বত্র বিরাজমান।
নারী আজ সব কিছুতে এগিয়ে। নারীর অবস্থান আজ ঘর থেকে মাঠে সর্বত্র।  কিন্তু নারীর কাজের যোগ্য প্রশংসা শোনার সৌভাগ্য আজো নারীদের হয়ে ওঠেনি।
নারী যেকোনো কাজ যত যোগ্যতার সাথে করুক না কেন তাকে সমাজ থেকে সমালোচনা শুনতেই হবে। আর সুন্দরী হলে তো কথাই নেই। যত অপবাদ সব তার সৌন্দর্যের উপর গিয়ে পড়ে।
সুন্দর করে যদি সৃষ্টিকর্তা কাউকে তৈরি করে তাহলে সে দায় তো তার না। নাকি ভদ্র সমাজ সেখানেও সৃষ্টিকর্তাকে প্রলুব্ধ করা হয়েছিলো বলে ধারণা করেন? কি জানি করতেও পারেন এমন ধারণা।
নারী মোটা হলে আপনাদের সমস্যা।নারী চিকন হলে আপনাদের সমস্যা। নারী কর্মঠ হলে সমস্যা। নারী অলস হলে সমস্যা।  নারী সাজগোছ করলে সমস্যা। নারীর পোশাকে সমস্যা।  নারীর সবকিছুতে আমাদের ভদ্র সমাজের সমস্যা।
মনে হয় যেন নারী সমাজে উচ্ছিষ্ট কোনো বস্তু।
আবার নারী না হলে আপনাদের কারো চলে না।এটা কিন্তু স্বীকার ও করবেন না।
যুগের পর যুগ পেরিয়ে গেলেও নারী আর মানুষ নামক স্থানটি সঠিকভাবে পায় না।
নারীর সৌন্দর্য শরীর এসব বাদ দিয়ে নারীর সুন্দর কাজগুলো তুলে ধরুন। কাজের যোগ্য সম্মানটুকু দেয়ার চেষ্টা করুন।
ভাবুন তো যে স্ত্রী নামক নারীটি আপনার সংসার সন্তান সামলাতে সামলাতে নিজের গোটা জীবন পার করে দিচ্ছে তাকে একটি বার ধন্যবাদ কৃতজ্ঞতা জানানোর ইচ্ছে কি আপনার মনে জেগেছে?
আজকাল নারীরা সমানতালে ঘরে বাইরে শ্রম দিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু আপনি কি কখনো স্ত্রী অফিস থেকে আসার পর এক কাপ চা করে খাইয়েছেন?
কিন্তু নারীরা সব পারে। নিজের খেয়াল রাখতে পারে অন্য জনের ও খেয়াল রাখতে পারে।
আজ নারীরা ফুটবল দুনিয়ায় সাড়াজাগানো সম্মান বয়ে এনেছে দেশের জন্য। বাংলাদেশ কে বিশ্বের দরবারে আর একবার মাথা উঁচু করা সম্মান এনে দিয়েছে। প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে উঠে আসা মেয়েগুলো তাদের অক্লান্ত পরিশ্রম আর চেষ্টায় এ সফলতা অর্জন করেছে।শ্রেষ্ঠ যোগ্যতার দাবী রাখে মেয়েগুলো। তাদের সম্মান জানাই। স্যালুট জানাই।তাদের জন্য কোনো প্রশিক্ষণ,ভালো  খাবার, পর্যাপ্ত বাসস্থান কিছুই ছিল না।
তবুও তারা সবটুকু দিয়ে দেশের জন্য লড়াই করেছে।
এবং দেশের জন্য বয়ে এনেছে বিরল সম্মান।
যতই যোগ্যতার প্রমাণ দিক সেখানে ও সমস্যা। ওদের  কাপড় চোপড়ে সমস্যা।  ওদের কথাবলায় সমস্যা মানে নষ্ট মানুষদের কাছে সমস্যার শেষ নেই যেন।
সংসারে ভালো হলে তো সব ঠিক আছে কিন্তু  খারাপ কিছু ঘটলে তার সম্পূর্ণ দোষ গিয়ে পড়ে মা অথবা স্ত্রী রূপী নারীটির উপর।
কারণ সমাজ জানে তাদের উপর অবলীলায় দোষ চাপানো যায়। ভাবে ও কিছু না। এটাই নারীদের প্রাপ্য।
এত উন্নয়ন চারিদিকে এত ডিজিটাল আমরা। প্রযুক্তির উন্নয়নের মাধ্যমে আমরা এত কিছু জানতে পারছি।কিন্তু কোথায় আসল উন্নয়ন?  কোথায় মানসিকতার পরিবর্তন?  কোথায় সম্মান শ্রদ্ধা জানানোর চেষ্টা?
নিজের ঘরের নারীটা ভালো আছে তো? একটু খবর রাখুন। সে কি চায়? একটু জানার চেষ্টা করুন।
আর কতকাল এমন ধারা চলবে? নারীরা যে কাজ করে তার যথাযথ মূল্যায়ন কোথায়?
একজন নারী যখন সবকিছু সামলিয়ে নিজেকে সৃজনশীল কাজের সাথে যুক্ত করে এবং এ কাজ নিয়ে এগিয়ে যেতে চায় সেটা তার জন্য অনেক চ্যালেঞ্জিং। তাই সেই নারীদের সৃজনশীল যোগ্যতার যথার্থ সম্মান করুন। নারীর সৌন্দর্য ইশ্বর প্রদত্ত আর নারীর কাজ তার নিজস্ব সৃজনশীলতা। দুটোর মধ্যে পার্থক্য আছে তাই মূল্যায়নে সতর্ক থাকুন।
এ কথা গুলো সামগ্রিক ভাবে বলছি। একজন নয় প্রতিটি নারীর একই কথা। কারণ নারীরা আজ সব কাজ তাদের যোগ্যতার পরিচয় দিয়ে করছে অবশ্যই সৌন্দর্য কে সামনে রেখে নয়।
একজন চাকুরীরত নারী অফিস ছুটি হলে দ্রুত সংসারে ফিরে সন্তান সংসার দেখার তাগিদে। আর একজন চাকুরীরত পুরুষ একটু ঘুরে ফিরে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিয়ে আস্তে ধীরে বাড়ি ফিরে কারণ সে জানে তার স্ত্রী সামলে নিবে সব।এটাই পার্থক্য নারী পুরুষের মাঝে। এটা দোষের তা বলছি না।কিন্তু চাইলেই আমরা বিষয়গুলি সমন্বয় করে চলতে পারি কোনো ব্যাপার না।
নারীরা যে কাজ করুক না কেন তাতে মিশে থাকে যত্ন,মায়া,ভালোবাসা। দক্ষতার সাথে যোগ্যতার সাথে ঘর থেকে মাঠ পর্যন্ত নারীরা কাজ করে যাচ্ছে।
নারীরা কাজের ক্ষেত্রে নিষ্ঠাবান এবং সৎ। নারীর এই অগ্রগতিতে সকলে পাশে থাকুন দেখবেন পরিবার, সমাজ, দেশ সবকিছু নির্মল বিশুদ্ধ পরিচ্ছন্ন হয়ে উঠেছে।।
লেখক_শিক্ষার্থী, প্রণব মন্ডল, ইংরেজি ডিসিপ্লিন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়।