নিজস্ব প্রতিনিধি নড়াইল ঃ নড়াইলে লালন সাধক হারেজ ফকীরসহ কয়েকজনকে মারধর ও বাদ্যযন্ত্র ভেঙ্গে ফেলার ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছেন নড়াইলের সাংস্কৃতিক কর্মীরা ।
শনিবার ( ৩ সেপ্টেম্বর ) বেলা ১১ টায় এ ঘটনার প্রতিবাদ ও বিচারের দাবিতে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট , নড়াইলের আয়োজনে নড়াইল প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয় ।
সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট নড়াইলের সভাপতি মলয় কুন্ডুর সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন নড়াইল পৌর মেয়র আঞ্জুমান আরা সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সহ - সভাপতি আসলাম খান লুলু , সাধারন সম্পাদক শরফুল আলম লিটু , যুগ্ম সাধারন সম্পাদক শামীমূল ইসলাম টুলু , জেলা মৎস্যজীবী লীগের সভাপতি সাইফুল ইসলাম প্রমুখ ।
বক্তারা বলেন , মৌলবাদীরা বার বার বিভিন্নভাবে বাঙ্গালি সংস্কৃতির ওপর আঘাত হানছে।এটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না । অবিলম্বে এই মৌলবাদীদের গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান । " অভিযোগে জানা গেছে , কালিয়া উপজেলার পুরুলিয়া ইউনিয়নের নওয়াগ্রামের বাসিন্দা হারেজ ফকীর তার ভক্তদের নিয়ে নিজ বাড়ির বাউল আশ্রমে ২৭ আগস্ট রাতে গানবাজনা করার সময় স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ইউপি চেয়ারম্যান মনি মিয়ার বড় ভাই আলী মিয়ার নেতৃত্বে ২০-২৫ জনের একটি দল বাড়িতে প্রবেশ করে তাকে মারধর , হারমোনিয়াম , তবলা , দোতারা , ঢোল , একতারা , বাঁশিসহ বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র ও বাড়ির মালালাল ভাংচুর করে ।
এ ঘটনায় হারেজ ফকীর গত বুধবার ( ৩১ আগস্ট ) কালিয়া থানায় স্থানীয় জামায়াত ইসলামী নেতা আলী মিয়া শেখ , একই গ্রামের মিন্টু শেখসহ অজ্ঞাত ২০-২৫ জনের বিরুদ্ধে একটি জিডি করলেও বৃহস্পতিবার ( ১ সেপ্টেম্বর ) আসামিরা হারেজ ফকীরের প্রতিবেশী স্থানীয় ইসমাইল চৌকিদারসহ ৪ জন নারী - পুরুষকে পুনরায় মারধর করে । সাধক ফকিরের ছেলে মিজান ফকীর বলেন , আসামিরা এখন মামলা প্রত্যাহারের জন্য চাপ দিচ্ছে।এক প্রশ্নে তিনি তার বাবা বা পরিবারের কেউ গাঁজা সেবন বা ব্যবসার সাথে জড়িত নন বলে দাবি করেন ।
এদিকে অভিযুক্ত আলী মিয়া শেখ বলেন , হারেজ গাঁজা সেবন ও ব্যবসা করে এলাকার যুব সমাজকে ধ্বংস করছে । এসব করতে তাকে নিষেধ করা হয়েছে।স্থানীয় কিছু ছেলে হারেজের বাড়িতে যেতে পারে।কিন্তু তারা কি করেছে তা জানেন না।এ ঘটনার সাথে তিনি জড়িত নন ।
এ প্রসঙ্গে কালিয়া থানার ওসি শেখ তাসমীম আলম বলেন , লিখিত অভিযোগের পর আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি । এলাকার পরিস্থিতি এখন শান্ত।তবে দুই পক্ষের মধ্যে বিষয়টির মিমাংসার চেষ্টা চলছে ।