থার্ড টার্মিনাল : চুক্তিবহির্ভূত ঠিকাদারকে কার্যাদেশ দেওয়ার অভিযোগ (ভিডিও)


প্রকাশের সময় : জুলাই ৬, ২০২২, ১০:৩৭ পূর্বাহ্ণ / ৩৯৫
থার্ড টার্মিনাল : চুক্তিবহির্ভূত ঠিকাদারকে কার্যাদেশ দেওয়ার অভিযোগ (ভিডিও)

শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনাল প্রকল্পের তিনটি বড় কাজ নির্ধারিত ঠিকাদারের পরিবর্তে অন্য প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে করানোর অভিযোগ উঠেছে। কাজগুলো থার্ড টার্মিনালের অংশ হলেও বেসরকারি বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ-বেবিচক তা বাস্তবায়নের জন্য গোপনে চুক্তিবহির্ভূত অন্য ঠিকাদারকে কার্যাদেশ দেয়। এতে সরকারকে গচ্চা দিতে হবে কমপক্ষে ১০ কোটি টাকা। এ ব্যাপারে থার্ড টার্মিনালের প্রকল্প পরিচালক সুস্পষ্ট নির্দেশনা চেয়ে প্রধান প্রকৌশলীকে চিঠি দিয়েছেন।

 

 

 

দেশের অন্যতম মেগা প্রকল্প হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনাল নির্মাণ কাজ। তবে বেশ কিছু অনিয়মের অভিযোগে এরই মধ্যে সমালোচনায় প্রকল্পটি।

 

 

 

এবার অভিযোগ উঠেছে, প্রকল্পের আওতায় থাকা তিনটি কাজ গোপন টেন্ডারে নতুন ঠিকাদারকে বুঝিয়ে দেওয়ার। বিমানবন্দরের নর্থ টেক্সিওয়ের বক্স কালভার্ট নির্মাণের ব্যয় ধরা হয়েছে ৫ কোটি ৫২ লাখ এবং ড্রেনেজ প্রকল্পের ৩ কোটি টাকা। অথচ থার্ড টার্মিনাল প্রকল্পের জন্য সরকার দক্ষিণ কোরিয়ার ঠিকাদার স্যামসাং ও জাপানের সিমুজির নেতৃত্বাধীন এভিয়েশন ঢাকা কনসোর্টিয়াম বা এডিসিকে ২২ হাজার কোটি টাকা প্রদান করেছে। এই ব্যয়ের মধ্যে এ দুটি ছাড়াও আরও একটি প্রকল্প অন্তর্ভুক্ত আছে।

 

 

 

অন্য ঠিকাদারকে দিয়ে কাজ করানোয় বেবিচকের অতিরিক্ত খরচ হবে ৮ কোটি টাকা। সব মিলে বেবিচকের গচ্চা যাবে কমপক্ষে ১০ কোটি টাকা।

 

 

 

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের নির্মাণ কাজ করছে মূল ঠিকাদার এডিসি। তাদেরই করার কথা ছিল নর্থ-সাউথ ট্যাক্সিওয়েতে বক্স কালভার্টসহ আরও দুটি প্রকল্প। তারা জানুয়ারিতে প্রকল্পের কাজটি করতে যেয়ে দেখতে পায় অন্য আরেকটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ করছে। এ বিষয়টি জানিয়ে তারা প্রকল্প পরিচালকের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন। প্রকল্প পরিচালক সেই বিষয়টি জানা জন্য সিভিল এভিয়েশনের প্রধান প্রকৌশলীর কাছে কারণ জানতে চান।

 

 

 

প্রকল্প পরিচালক বেবিচকের প্রধান প্রকৌশলীর কাছে কাজ তিনটি থার্ড টার্মিনালের ঠিকাদার এডিসির মাধ্যমে নাকি, বেবিচকের নিজস্ব অর্থায়নে প্রকল্প বহির্ভূত মেসার্স এমসি-এমটিটি জেভি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে করা হবে, তার সুস্পষ্ট নির্দেশনা চান। তবে এ ব্যাপারে মুখ খুলতে নারাজ প্রধান প্রকৌশলী।

 

 

 

থার্ড টার্মিনালের কাজ অন্য ঠিকাদারকে দেওয়া সুযোগ নেই বলছেন সংস্থাটির সাবেক চেয়ারম্যান।

 

 

 

বেবিচকের সাবেক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) এম ইকবাল হোসেন বলেন, এটি হচ্ছে বড় ধরনের দুর্নীতি। এই কাজটা যখন সিভিল এভিয়েশনের সে ঠিকাদার করছে, এরা ক্ষতিপূরণ নেবে। তাদের যদি ২৫ কোটি টাকা ধরা থাকে এই কাজে, তাহলে তা সিভিল এভিয়েশন দেবে। দিতে হবে এটা। কারণ, আন্তর্জাতিক নিয়ম। এটা ঠেকানো যাবে না।

 

 

 

এর সঙ্গে জড়িতদের কঠোর শাস্তি দেওয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি।

 

 

 

ইকবাল হোসেন বলেন, নিশ্চয়ই ১০ কোটি টাকার কাজে কয়েক শতাংশ টাকা দিয়েছে। এখন তারা এর জন্য দায়ী থাকবে। তাদের শাস্তি দেওয়া উচিত। এটার কোনো অনুসন্ধান দরকার নেই। হায়ারিং অ্যান্ড ফায়ারিং করা উচিত। এটা কোর্টে যেতে দেওয়া যাবে না। এটা করলে যদি আপনি আমাদের প্রকল্পগুলো ঠিকমতো চালাতে পারবেন।

 

 

 

রাষ্ট্রের অর্থ অপচয় করে এই কাজ অন্য ঠিকারদারকে দিয়ে করানো হবে না বলে জানান বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান।

 

 

 

তিনি বলেন, কাজটি যখন জানতে পেরেছি, এটা কোঅর্ডিনেট করার জন্য টাইমলাইনে অ্যাডজাস্ট হয় কি না। যদি ওদের দিয়ে কাজটা আগে করিয়ে নেওয়া যায়, তাহলে এটা যেন অন্যদের দিয়ে না করি।

 

 

 

এই ঘটনার সঙ্গে বেবিচকের যেসব কর্মকর্তা জড়িত তাদের ছাড়া দেওয়া হবে না বলে জানান চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, এটা অবশ্যই বাতিল হয়ে যাবে। তা না হলে আমাদের ক্ষতি হয়ে যাবে। আমি টাকাটা খরচ করলে, আমি তো টাকাটা ফেরত পাব না। শুধু শুধু আমি কেন টাকাটা খরচ করব।