তীব্র গরমে চার্জার ফ্যান যেন সোনার হরিণ!


প্রকাশের সময় : জুন ৮, ২০২৩, ১:৫৪ অপরাহ্ণ / ৯৫
তীব্র গরমে চার্জার ফ্যান যেন সোনার হরিণ!

সেলিম রানা :- নিজস্ব প্রতিবেদক :- প্রচণ্ড গরমে কিছুটা স্বস্তি পেতে বিকল্প খুঁজছে মানুষ। ফলে বেড়েছে চার্জার ফ্যানের (রিচার্জেবল ফ্যান) চাহিদা। নামিদামি ব্র্যান্ডসহ কোনো সাধারণ শোরুমেই এখন মিলছে না চার্জার ফ্যান। এই চাহিদাকেই পুঁজি করে পণ্যটির দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। রাজধানীর বিভিন্ন ইলেকট্রনিক্সের দোকানে এখন দেড় থেকে দুইগুণ দামে বিক্রি হচ্ছে চার্জার ফ্যান।

বুধবার (৭ জুন) রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ইলেকট্রনিক পণ্যের খুচরা ও পাইকারি দোকানে খোঁজ নিয়ে দেখা যায় এমন চিত্র।

রামপুরা বাজার এলাকায় ১২-১৫টি ইলেকট্রনিক পণ্যের দোকান রয়েছে। এরমধ্যে অধিকাংশ দোকানে নেই চার্জার ফ্যান। এমনকি একটি ব্র্যান্ডের শোরুমেও মেলেনি এ ধরনের ফ্যান। সবারই এক কথা, স্টক শেষ।

রাজধানীর গুলিস্তানের স্টেডিয়াম মার্কেটে যখন চার্জার ফ্যানের খোঁজ নিচ্ছিলেন, সেসময় অনেক ক্রেতারও দেখা মেলে। মার্কেটে এসে দেখি সাড়ে ৮ হাজার টাকার ওই কম্বো (এসি-ডিসি) ফ্যানের দাম চাচ্ছে ১৪ হাজার টাকা।

স্টেডিয়াম মার্কেটে ওই সময় চার্জার ফ্যানের শত শত ক্রেতার দেখা মেলে। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে এসেছেন তারা। বেশিরভাগ ক্রেতা জানিয়েছেন, তাদের এলাকার দোকান বা শোরুমে চার্জার ফ্যান পাওয়া যাচ্ছে না। তবে স্টেডিয়াম মার্কেট ও নবাবপুর মার্কেটে ফ্যান পাওয়া যাচ্ছে। ক্রেতাদের অভিযোগ, সংকটকে পুঁজি করে এখন চার্জার ফ্যানের দাম নেওয়া হচ্ছে দেড় থেকে দুইগুণ।

দেখা গেছে, ক্রেতারা দোকানে দোকানে ঘুরে চার্জার ফ্যানের দরদাম করছেন। কিন্তু পছন্দ হলেও দামে মিলছিল না। এছাড়া কোন ধরনের চার্জার ফ্যান কিনলে ভালো হবে, তা নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বেরও শেষ নেই।

নবাবপুরের বেশ কয়েকটি বড় আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ ক্রেতা-বিক্রেতাদের। ওইসব প্রতিষ্ঠানের বিক্রয়কেন্দ্রে গিয়ে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে কথা বলতে চাইলে কেউ কিছু বলতে রাজি হননি। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক আমদানিকারক বলেন, চাহিদার কারণে আমরা ১০০ টাকা বাড়িয়ে দিলে সেটা খুচরায় ৫০০ টাকা বাড়তি দরে বিক্রি হচ্ছে।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, গরমের সঙ্গে অস্বাভাবিক লোডশেডিংয়ের কারণে চার্জার ফ্যানের চাহিদা এখন তুঙ্গে। চাহিদার এই পরিমাণ ফ্যানের জোগান এখন আমদানিকারকদের কাছে নেই। তারা বছরে চার থেকে পাঁচ লাখ চার্জার ফ্যান আমদানি করেন। কিন্তু এবার চাহিদা বেড়েছে কয়েকগুণ। এতে তৈরি হয়েছে পণ্যের সংকট, বেড়েছে দামও।

ডলারের মূল্যবৃদ্ধিকে দায়ী করে ব্যবসায়ীরা আরও বলেন, ডলারের মূল্যবৃদ্ধি, অস্বাভাবিক হারে কনটেইনার ভাড়া বৃদ্ধি ও এলসি খোলার জটিলতার কারণে আমদানি খরচ আগের তুলনায় বেড়েছে। ফলে এসবের প্রভাবও রয়েছে বাজারে।

তবে শুধু আমদানি নয়, দেশীয় অনেক প্রতিষ্ঠানও এখন চার্জার ফ্যান তৈরি করে থাকে। ফলে একসময় এ বাজার পুরোপুরি আমদানিনির্ভর থাকলেও এখন তা অনেকটাই কাটতে শুরু করেছে। তবে দেশি ব্র্যান্ডের এসব প্রতিষ্ঠানের কাছেও এখন চার্জার ফ্যানের পর্যাপ্ত সরবরাহ নেই। রামপুরার একটি শোরুমের সিনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর বলেন, গত ৩ জুলাই থেকে আমাদের শোরুমে চার্জার ফ্যানের স্টক নেই। কবে আসবে সেটাও জানি না। প্রতিদিন অন্তত ৫০০ ক্রেতা ফিরে যাচ্ছেন।

গরম বাড়ার কারণে শুধু যে শোরুম আর দোকানে ফ্যানের বিক্রি বেড়েছে- তা নয়, ফুটপাতের অনেক দোকানেও বিক্রি হচ্ছে ছোট চার্জার ফ্যান। তবে সেখানেও দাম বেশ চড়া।