তদারকির অভাবে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রি


প্রকাশের সময় : ডিসেম্বর ১৯, ২০২২, ৫:১৭ অপরাহ্ণ / ৫১
তদারকির অভাবে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রি

জেলা প্রতিনিধি:- চট্টগ্রাম: ফার্মেসিতে অভিযান চালালেই মিলছে মেয়াদোত্তীর্ণ ও অনুমোদনহীন ওষুধ। তারপরও থেমে নেই বিক্রি।

শুধু চলতি মাসেই বিভিন্ন সংস্থার চালানো অভিযানে বিপুল পরিমাণ ওষুধ জব্দের পাশাপাশি জরিমানাও আদায় করা হয়।

এসব ওষুধ সেবনের কারণে বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি।

সঠিক তদারকি না থাকায় মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রি বন্ধ হচ্ছে না বলে দাবি স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্টদের।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ওষুধ যেমন জীবন রক্ষা করতে পারে, তেমনি একই ওষুধ নকল, মেয়াদোত্তীর্ণ কিংবা নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় সংরক্ষণ না করলে কার্যকারিতা হারিয়ে জীবনহানিও ঘটাতে পারে। এছাড়া এসব ওষুধ সেবনে ত্বকে এলার্জিসহ কিডনি ও লিভারে সমস্যা হতে পারে। মস্তিষ্কে প্রদাহ সৃষ্টি হতে পারে।

জানা গেছে, চলতি ডিসেম্বর মাসে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর নগরের বিভিন্ন এলাকায় ৪ বার অভিযান চালিয়েছে। এর মধ্যে গত ৬ ডিসেম্বর নগরের মুরাদপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রির অপরাধে এক প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করা হয়। ৭ ডিসেম্বর নগরের জামালখান এলাকায় অভিযান চলিয়ে একই অপরাধে তিন প্রতিষ্ঠানকে ৩৪ হাজার টাকার জরিমানা করা হয়। এছাড়া ৮ ডিসেম্বর নগরের খুলশী এলাকায় চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতালের ফার্মেসীতে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ ও ইনজেকশন বিক্রির অপরাধে ১ লাখ টাকা জরিমানা এবং গত ১৩ ডিসেম্বর হাটহাজারী উপজেলায় একটি প্রতিষ্ঠানকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। সর্বশেষ ১৮ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের সামনে ৬ ফার্মেসিকে ৫৫ হাজার টাকা জরিমানা করে জেলা প্রশাসন।

জাতীয় ওষুধ নীতি অনুযায়ী, নকল ওষুধ প্রস্তুত বা উৎপাদন, মজুদ, বিক্রয়, বিতরণ, প্রদর্শন করলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড অথবা অনুর্ধ্ব ১৪ বছর সশ্রম কারাদণ্ড অথবা অনুর্ধ্ব ২০ লাখ টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন। মেয়াদোত্তীর্ণ তারিখের পর কোনও ওষুধ বিক্রয়, মজুদ, প্রদর্শন করলে অনূর্ধ্ব তিন বছর সশ্রম কারাদণ্ড অথবা তিন লাখ টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের প্রধান মো. তানভীর এহসান বলেন, যে কোনও ওষুধের মেয়াদ শেষ হওয়া মানেই ওই ওষুধের কার্যকারীতা কমে যাওয়া। মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ সেবনে স্বাস্থ্যঝুঁকি থাকে। অনেক ক্ষেত্রে তা প্রাণহানির কারণ হয়। মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বাজার থেকে সরিয়ে নেওয়ার দায়িত্ব ওষুধ কোম্পানিগুলোর। কিন্তু কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ওষুধ মেয়াদোত্তীর্ণ হলেও তা কোম্পানিকে বুঝিয়ে দেন। পাল্টানো হয় মোড়ক। পরে তা ভোক্তাকে গছিয়ে দেন। যা মারাত্মক অপরাধ। এ বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসনকে আরও কঠোর হতে হবে।

ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের উপ-পরিচালক সাখাওয়াত হোসেন সবুজ বলেন, মেয়াদোত্তীর্ণ ও অননুমোদিত ওষুধ বিক্রি বন্ধে আমরা কঠোর। অপরাধ বিবেচনায় জরিমানা ও বিভিন্ন সাজা প্রদান করা হয়। মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রি বন্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে। তবে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের নিজস্ব কোনও ম্যাজিস্ট্রেট না থাকায় জেলা প্রশাসনকে আগে অবহিত করতে হয়। ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেওয়ার পর আমরা অভিযানে যেতে পারি।