ডলার সংকট, বাংলাবান্ধায় অর্ধেকে নেমে এসেছে আমদানি-রপ্তানি


প্রকাশের সময় : জানুয়ারি ২৬, ২০২৩, ৪:২৫ অপরাহ্ণ / ৮৯
ডলার সংকট, বাংলাবান্ধায় অর্ধেকে নেমে এসেছে আমদানি-রপ্তানি

বিশেষ প্রতিনিধি :- পঞ্চগড়: পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর দিয়ে সড়ক পথে বাংলাদেশ থেকে ভারত, নেপাল ও ভুটানে পণ্য আমদানি-রপ্তানির মাধ্যমে অনেক টাকা রাজস্ব আয় হয়। তবে নতুন প্রত্যয়পত্র বা লেটার অব ক্রেডিট (এলসি) না পাওয়ায় স্থবিরতা দেখা দিয়েছে দেশের গুরুত্বপূর্ণ এ বন্দরে।

করোনার কারণে দীর্ঘ দুই বছর পর দেশের একমাত্র চতুর্দেশীয় স্থলবন্দর বাংলাবান্ধায় আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম চললেও এখন ব্যস্ততা অর্ধেকে নেমে এসেছে।

জানা যায়, এ স্থলবন্দরে প্রতিদিন ২৫০ থেকে ৩০০টি পণ্যবাহী ট্রাকে আমদানি-রপ্তানি করা হলেও করোনার পর থেকে ডলার সংকটে তা নেমে এসেছে ২০০ এর নিচে। ব্যাংক থেকে নতুন এলসি না হওয়ায় পণ্য আমদানি কমে গেছে। ফলে বন্দরের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায় কি না সে চিন্তায় পড়েছেন বন্দর সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। এতে চার দেশের গুরুত্বপূর্ণ এ বন্দর থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন অনেকে। ফলে একদিকে যেমন কোটি কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার, এ অবস্থায় বেকার হয়ে পড়েছেন বন্দর সংশ্লিষ্ট শ্রমিকরা।

বন্দর ব্যবসায়ীরা বলছেন, করোনার সময় এ বন্দর দিয়ে অন্তত ৪০০ গাড়ি দেশে প্রবেশ করলেও বর্তমানে ২০০ গাড়িও আসছে না। ব্যাংক নতুন এলসি না দেওয়ায় এবং ডলার সংকটে সমস্যা হচ্ছে। গুরুত্বপূর্ণ এ বন্দরটি বর্তমানে ধীরগতিতে চলছে। যদি দ্রুত এ সমস্যার সমাধান না হয়, তাহলে বন্দরটি বন্ধের ঝুঁকিতে পড়বে। এ সমস্যা নিরসনে সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করছেন ব্যবসায়ীরা।

শ্রমিকরা জানান, দীর্ঘ সময় ধরে বন্দরে আমদানি করা গাড়ি প্রবেশ না করায় কর্মহীন হয়ে বসে থাকতে হচ্ছে। গত দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে তেমন লোড-আনলোড হচ্ছে না। এখানে কয়েক হাজার শ্রমিকের কর্মসংস্থান রয়েছে। বর্তমানে কাজ না থাকায় তারা পরিবার পরিজন নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন।

বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক কুদরত-ই খুদা মিলন বলেন, ডলার সংকটের কারণে পর্যাপ্ত নতুন এলসি না হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। একই সঙ্গে কর্মহীন হচ্ছেন বন্দরের প্রায় ১০ হাজার শ্রমিক। জেলায় ভারী কোনো শিল্প প্রতিষ্ঠানও নেই যে সেখানে তাদের বিকল্প কর্মসংস্থান হয়।

তেঁতুলিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মাহমুদুর রহমান ডাবলু জানান, দেশের অর্থনীতিতে করোনার অনেকটা প্রভাব পড়ে। এরপর এ বন্দরটিতেও দেখা যায় তার প্রভাব। এছাড়া ইউক্রেন ও রাশিয়ার যুদ্ধের প্রভাব রয়েছে। সব মিলিয়ে ডলার সংকট ও ডলারের মূল্য বেড়েছে অনেক। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থলবন্দর। আশা করি, এ সমস্যা দ্রুত সমাধান হবে।

বাংলাবান্ধা ল্যান্ডপোর্ট লিমিটেডের বন্দর ম্যানেজার আবুল কালাম আজাদ বলেন, বর্তমানে নতুন এলসি না হওয়ায় তেমনভাবে আমদানি হচ্ছে না। যা হচ্ছে সিমিত পরিসরে। তাই কিছুটা সমস্যা দেখা দিয়েছে এ বন্দরে।

এদিকে গত ২০২১-২২ অর্থবছরে সরকারি রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৭০ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। তবে আদায় হয় ৪১ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। এদিকে ২০২২-২৩ (ডিসেম্বর পর্যন্ত) লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩৫ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। তবে ডিসেম্বর পর্যন্ত আদায় হয়েছে ২৫ কোটি ৩৪ লাখ টাকা বলে জানান বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরের শুল্ক স্টেশনের সহকারী কমিশনার মবিন উল ইসলাম।