জিম্বাবুয়ে আমাদের চেয়ে ভালো খেলেছে : তামিম


প্রকাশের সময় : আগস্ট ১২, ২০২২, ২:৫৮ পূর্বাহ্ণ / ৪১৭
জিম্বাবুয়ে আমাদের চেয়ে ভালো খেলেছে : তামিম

টি-টোয়েন্টির পর জিম্বাবুয়ের কাছে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজও ২-১ ব্যবধানে হারে সফরকারী বাংলাদেশ। ওয়ানডে সিরিজে বাংলাদেশের হার অবাক করেছে বিশ্বকে।
কারণ গত পাঁচটি ওয়ানডে সিরিজেই জয় আছে বাংলাদেশের। এরমধ্যে শ্রীলংকা, দক্ষিণ আফ্রিকা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষেও সিরিজ জয় ছিলো টাইগারদের। এছাড়া বিশে^র বড় দলগুলোকে পেছনে ফেলে বিশ্বকাপ সুপার লিগের পয়েন্ট টেবিলের দ্বিতীয়স্থানে আছে বাংলাদেশ। এ অবস্থায় আইসিসি ওয়ানডে র‌্যাঙ্কিংয়ের ১৫তম দল জিম্বাবুয়ের কাছে হার অবাক করার মতই।
এভাবে সিরিজ হারকে ব্যাখা করতে গিয়ে বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবাল জানিয়েছেন এমন হারের কোন অজুহাত হতে পারে না। জিম্বাবুয়ে আমাদের চেয়ে ভালো খেলেছে।
ওয়ানডে সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচই ৫ উইকেটে হারে বাংলাদেশ। আর গতরাতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডে ১০৫ রানের বড় ব্যবধানে জিতে সিরিজে হোয়াইটওয়াশ এড়াতে সক্ষম হয় টাইগাররা। ম্যাচ শেষে তামিম বলেন, ‘এটা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই আমাদের সিরিজ জেতা উচিত ছিলো। এখানে কোনভাবেই অজুহাত দিতে পারবো না। আমরা সামর্থ্য অনুযায়ী খেলতে পারিনি। জিম্বাবুয়ে আমাদের চেয়ে ভালো ছিল। তাদেরকে কৃতিত্ব দিতে হবে।’
জিম্বাবুয়ের কাছে সিরিজ হারাতেই আলোচনা হচ্ছে, ভারত-অস্ট্রেলিয়া বা শীর্ষ কোন দলের বিপক্ষে হারলে এমন আলোচনা বা সমালোচনা হতো না বলে মনে করেন তামিম। তিনি বলেন, ‘উন্নতির কথা বলতে গেলেই একই কথা চলে আসে। হারলেই বলা হয় এটা করা উচিত, ওটা করা উচিত। এখন আমি যা বলবো সেটি আপনাদের পছন্দ হতে পারে, নাও পারে। তবে আপনারা চিন্তা করে দেখবেন, এই সিরিজটা আমরা যেভাবে হেরেছি, যদি ভারত, অস্ট্রেলিয়া বা শীর্ষ কোন দলের সাথে হারতাম তাহলে এমন প্রশ্ন উঠতো না, কিছুই হতো না। হয়তো দেখা গে, বিরাট কোহলি বা স্টিভেন স্মিথ এমন ইনিংস খেললে আমরা মেনে নিতাম।’
তামিম আরও বলেন, ‘এখানে প্রথম দুই ম্যাচে রাজার সাথে  একটিতে চাকাভা ও আরেকটিতে কাইয়া যেভাবে ব্যাটিং করেছে এটাই প্রমাণ করে ওয়ানডে ক্রিকেটে আমাদের অনেক উন্নতি করার দরকার আছে। তাদের খাটো করছি না। তারা অবিশ্বাস্য ভালো খেলেছে। কিন্তু আমাদের দলের তরফ থেকে বলতে পারি আমাদের অনেক কিছু উন্নতি করা বাকি। তারা করলে অন্যরাও করতে পারবে আমাদের সাথে। আয়ারল্যান্ডে সিরিজ আছে আমাদের, ওরাও পারে এটা। আমাদের সবার জন্যই এটি শিক্ষা।’
প্রথম ম্যাচে ৩’শ করতে পারলেও পরের দুই ম্যাচে বাংলাদেশের দলীয় রান ৩’শ হয়নি। তবে তামিমের লক্ষ্য ওয়ানডতে ৩৫০ রান করা। তিনি বলেন, ‘অবশ্যই আমাদের দলীয় লক্ষ্যগুলোর একটি হলো, ভবিষ্যতে ৩৫০ রান করা। এটি আমাদের ভাবনায় আছে, সাড়ে তিনশ করতে চাই আগে যা কখনও করতে পারিনি। এটা বলছি না পরের ম্যাচেই করে ফেলবো। তবে এই লক্ষ্য আমরা ঠিক করেছি।’
তামিম আরও বলেন, ‘যদি ভারতে হতে যাওয়া বিশ্বকাপের কথা ভাবি, ওখানে প্রায় স্কোরই হবে ৩০০। মিরপুর বা ভারতের কিছু মাঠে হয়তো ২৬০-২৭০ করেও জয় সম্ভব। তবে বেশির ভাগ ভেন্যুতেই ২৯০, ৩০০, ৩১০ রান এমন করতে হবে। এটা নিয়ে আমরা সচেতন আছি। আমি নিশ্চিত সামনের দিনগুলোতে আমাদেরও সেখানে পৌঁছাতে দেখবেন আপনারা, যেখানে অন্যরা যাচ্ছে।’
তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে আফিফ হোসেনের ব্যাটিং দৃঢ়তায় জিম্বাবুয়ের কাছে হোয়াইটওয়াশ এড়ায় বাংলাদেশ। ৮১ বলে অনবদ্য ৮৫ রানের ইনিংস খেলেন আফিফ। তাই আফিফের প্রশংসা করেছেন তামিম, ‘তার বিশেষ গুণ রয়েছে, যা খুব বেশি মানুষের নেই। দ্বিতীয় ও তৃতীয় ম্যাচে সে যখন ব্যাটিংয়ে আসে তখন আমরা চাপে ছিলাম এবং সে ম্যাচ নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এখনই আফিফকে কোন উপাধি না দেই, এখনই খেতাব দেওয়া তাড়াহুড়ো হয়ে যাবে। এ ধরনের খেলোয়াড়দের ক্ষেত্রে অনেক সময় এমন হবে একই জিনিস করতে গিয়ে আউট হয়ে যাবে। আমি চাই না সে তার গুণাগুণ হারাক। যেভাবে সে ব্যাট করতে চায় করুক। এখন তার ক্যারিয়ারের শুরু। আশা করি দারুণ এক ক্যারিয়ার হবে।’
ওয়ানডে সিরিজে ২টি হাফ সেঞ্চুরিতে ১৩১ রান করেছেন তামিম। ব্যাট হাতে দারুণভাবে ইনিংস শুরুর পরও হাফ সেঞ্চুরির পরই থামেন তামিম। যা সেঞ্চুরিতে রুপান্তরিত করতে পারেননি। তাই নিজের ব্যাটিং পারফরমেন্স নিয়ে মোটেও খুশি নন তামিম। তিনি বলেন, ‘আমি মোটেও খুশি নই। যদিও কিছু রান করেছি তবুও খুশি নই। কারণ সাধারণত এরকম উইকেট পাওয়াই মুশকিল। যত ভালো ব্যাটিং উইকেটই থাকুক না কেন বোলারদের জন্য কিছু সহায়তা থাকে। এখানে প্রথম ১০ ওভারের পর উইকেট ব্যাটিংয়ের জন্য এত ভালো হয়ে যায় যে এখানে ৫০/৬০ এমন স্কোর যথেষ্ট নয়।