চট্টগ্রামে বই উৎসব নিয়ে শঙ্কা


প্রকাশের সময় : নভেম্বর ২২, ২০২২, ৮:০৮ অপরাহ্ণ / ৭৫
চট্টগ্রামে বই উৎসব নিয়ে শঙ্কা

নিজস্ব প্রতিবেদক  চট্টগ্রাম:- আর কদিন পরেই ইংরেজি নতুন বছর। নতুন বছর মানেই নতুন ক্লাসে নতুন বইয়ের উৎসব। বর্তমান সরকারের আমলে বিগত বেশ কয়েক বছর ধরে নতুন বছরের প্রথম দিন অর্থাৎ ১ জানুয়ারিতে বই উৎসব পালিত হয়ে আসছে। সারাদেশে একযোগে প্রথম থেকে নবম শ্রেণির সব শিক্ষার্থীর হাতে তুলে দেওয়া হয় নতুন বই। বিশেষ করে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এই উৎসব বেশ আশা জাগানিয়া। কিন্তু এবছর সেই উৎসবে কিছুটাও হলেও অস্বস্তি ভর করেছে।

চট্টগ্রামে ২০২৩ সালের জন্য প্রাথমিকে প্রায় সাড়ে ৪৭ লাখ বইয়ের চাহিদা থাকলেও এ পর্যন্ত একটি বইয়ও আসেনি। অথচ বিগত বছরগুলোতে অক্টোবর মাসেই পরবর্তী বছরের নতুন বই আসা শুরু হতো। এবার আগেভাগে বই না আসায় নতুন বছরে নির্ধারিত সময়ে শতভাগ বই পাওয়া নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

তবে ডিসেম্বরের শেষ নাগাদ শতভাগ বই হাতে পাওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন চট্টগ্রাম জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শহীদুল ইসলাম।

তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত আমরা কোনো বই পাইনি। তবে এ নিয়ে এখনই দুশ্চিন্তার কিছু নেই। কিছুদিনের মধ্যে বই সরবরাহ শুরু হবে। আর ডিসেম্বরের শেষ নাগাদ অর্থাৎ ১ জানুয়ারির আগেই চাহিদার সব বই চলে আসবে বলে আমরা আশা করছি।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, মহানগরীর ৬টি থানা ও ১৫টি উপজেলাসহ চট্টগ্রাম জেলায় প্রাথমিক পর্যায়ের মোট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৪ হাজার ৩৫৩টি। এর মধ্যে জাতীয়করণকৃতসহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ২ হাজার ২৬৯টি, বেসরকারি কিন্ডার গার্টেন (কেজি স্কুল) ১ হাজার ৬৭৭টি, এনজিও স্কুল ১৩৩টি, উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন ১২৯টি, আনরেজিস্ট্রার্ড (অনিবন্ধিত) স্কুল ১৪টি, পরীক্ষণ স্কুল ২টি, কেজি স্কুল (ইংরেজি মাধ্যম) ৮৮টি এবং অন্যান্য ৪১টি স্কুল রয়েছে।

সবমিলিয়ে চট্টগ্রামের ৪ হাজার ৩৫৩টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রাক-প্রাথমিকের ১ লাখ ৪৬ হাজার ৬১৬ জনসহ পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১০ লাখ ৮২ হাজার ৮১০ জন। এসব শিক্ষার্থীর জন্য ২০২৩ সালের সম্ভাব্য চাহিদার ভিত্তিতে বরাদ্দকৃত মোট বইয়ের সংখ্যা ৪৭ লাখ ৫২ হাজার ২৯৭টি। ২১ নভেম্বর পর্যন্ত একটি বইও পৌঁছায়নি বলে শিক্ষা অফিসের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতি বছর অক্টোবরের দিকে স্কুলগুলোতে বই আসা শুরু হয়। ছাপাখানা থেকে বইগুলো সরাসরি উপজেলা পর্যায়ের গোডাউনে পৌঁছে দেওয়া হয়। পরে গোডাউন থেকে বইগুলো স্কুল পর্যায়ে হস্তান্তর করা হয়ে থাকে। তবে এবার নভেম্বর শেষ হতে চললেও ছাপাখানাগুলো এখনো পর্যন্ত কোনো বই সরবরাহ দিতে পারেনি।

সূত্রে জানা যায়, সারাদেশের পাশাপাশি চট্টগ্রামের দুটি এবং নোয়াখালীর একটি ছাপাখানায় পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণের কাজ চলছে। ছাপাখানাগুলোতে বই মুদ্রণের বিষয়টি পর্যবেক্ষণ ও পরিদর্শনে আলাদা কমিটি রয়েছে। থানা শিক্ষা কর্মকর্তা ও সহকারী থানা শিক্ষা কর্মকর্তাদের নিয়ে গঠিত এ কমিটি প্রায় প্রতিদিনই ছাপাখানা পরিদর্শন করছেন বলে জানিয়েছেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সংশ্লিষ্টরা।