কাউকে হত্যা করে জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় আসেননি: বুলু


প্রকাশের সময় : জানুয়ারি ২১, ২০২৩, ৪:৩৭ অপরাহ্ণ / ৭২
কাউকে হত্যা করে জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় আসেননি: বুলু

নিজস্ব প্রতিবেদক :- নারায়ণগঞ্জ: বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান কাউকে হত্যা করে ক্ষমতায় আসেননি বলে দাবি করেছেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লাহ বুলু। জাতির প্রয়োজনে এ দেশের সিপাহী-জনতা তাকে ক্ষমতায় নিয়ে আসে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

শনিবার (২১ জানুয়ারি) দুপুরে নারায়ণগঞ্জের নবীগঞ্জ ঘাট এলাকায় জিয়াউর রহমানের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে মাছের পোনা অবমুক্ত শেষে এসব কথা বলেন তিনি।

সেনাবাহিনীর পাশাপাশি আরেকটি বাহিনী তৈরি করে ‘তারা’ দেশে অরাজকতা তৈরি করেছিল বলেও এ সময় মন্তব্য করেন বুলু। তারা বলতে তিনি আওয়ামী লীগকে বুঝিয়েছেন। তিনি বলেন, কিন্তু ১৯৭১ সালে যেভাবে জিয়াউর রহমান ঘোষণা দিয়েছিলেন, সেভাবেই ৭৫ সালে তিনি ক্ষমতায় আসেন। কাউকে হত্যা করে জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় আসেননি।

জিয়াউর রহমানকে ‘ক্ষণজন্মা পুরুষ’ উল্লেখ করে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, তার জন্ম না হলে স্বাধীনতার ঘোষণা হতো না। সেদিন তরুণ মেজর বিদ্রোহ ঘোষণা করে কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে স্বাধীনতার ঘোষণা দিলেন। মুক্তিযুদ্ধের পরে তিনি আবার সেনা বাহিনীতে ফিরে গেলেন। যে বিষয়গুলোকে সামনে রেখে দেশ স্বাধীন হয়েছিল তারা দেশ স্বাধীনের পর বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল। তারা (আওয়ামী লীগ) বাকশাল কায়েম করে মানুষের মৌলিক অধিকার হরণ করেছিল। বাক স্বাধীনতা ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হরণ করেছিল। কৃত্রিম দুর্ভিক্ষ তৈরি করায় ১৪ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।

শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান আধুনিক বাংলাদেশের রূপকার। এদেশে অনেক নেতা মারা গিয়েছেন। কার জানাজায় কতজন লোক হয়েছে? শেখ হাসিনা আক্ষেপ করে বলেছিলেন, “ভোর পর্যন্ত তারা বলেছিল বঙ্গবন্ধু যেখানে আমরা আছি সেখানে। কিন্তু আমার বাবার লাশ বত্রিশ ঘণ্টা ধানমণ্ডিতে পড়েছিল। কেউ উকি দিয়ে আমার বাবার লাশ দেখতে যায়নি। রিলিফের কাপড় দিয়ে আমার বাবার দাফন হয়েছে। ” কেন আসেনি তা ইতিহাসের মূল্যায়ন।

ওরা বলে জিয়াউর রহমান নাকি মুক্তিযুদ্ধ করেননি। আমি বলতে চাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনার বাবাই তো ক্ষমতায় ছিলেন। তিনি কেন জিয়াউর রহমানকে বীর উত্তম খেতাব দিয়েছিলেন? কেন তাকে শ্রেষ্ঠ সেক্টর কমান্ডারের খেতাব দিয়েছিলেন? তাহলে সেই সরকারেরও বিচার হওয়া উচিত?

বরকতউল্লাহ বুলু আরও বলেন, আজও বাংলাদেশে ৩৫ লাখ বিএনপি নেতাকর্মীর নামে মামলা। আমাদের হাজার হাজার নেতাকর্মী পঙ্গু। এর থেকে মানুষ মুক্তি চায়। ২৭ দফা ও দশ দফার ভিত্তিতে একটি নিরপেক্ষ সরকার আদায় করতে হবে। শেখ হাসিনার অধীনে কোনো নির্বাচন হবে না। এ সরকারকে বিশ্বাস করা যায় না। আমরা নির্বাচনের পর জাতীয় সরকার গঠন করে দেশকে পুনর্গঠন করবো। আগামী দিনে কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করে এ সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে হবে।

এ সময় গ্যাসের মূল্য নিয়েও তিনি কথা বলেন। বুলু বলেন, গ্যাসের দাম এক দিনে ত্রিশ টাকা হয়ে গেল। আদানির সাথে চুক্তি ঝাড়খণ্ড থেকে বিদ্যুৎ আনবেন! কার স্বার্থে এই চুক্তি? ইসলামি ব্যাংক থেকে ত্রিশ হাজার কোটি টাকা নিয়ে গেল, তা তারা বলতে পারেন না। যে লুণ্ঠন হচ্ছে এর বিচার এদেশের মাটিতে হবে।

শীতলক্ষ্যা নদীর পানি দুষিত দাবি করে বিএনপির এ নেতা বলেন, জিয়াউর রহমানের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আমরা মৎস্যজীবী দলের পক্ষ থেকে শীতলক্ষ্যায় মাছের পোনা অবমুক্ত করেছি। কিন্তু এ পোনাগুলো বাঁচবে কিনা আল্লাহ জানেন। পানি দুষিত, এ বিষয়ে সরকার বা প্রশাসনের কোনো নজর নেই।

পোনা অবমুক্তকরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মহানগর বিএনপি ও মৎস্যজীবী দলের নেতাকর্মীরা।