এমন মৃত্যু মা–বাবা হিসেবে কীভাবে মেনে নিই? হত্যাকাণ্ডে যাঁরা জড়িত, তাঁদের বিচার হোক।


প্রকাশের সময় : নভেম্বর ৮, ২০২২, ৩:২১ অপরাহ্ণ / ৮৪
এমন মৃত্যু মা–বাবা হিসেবে কীভাবে মেনে নিই? হত্যাকাণ্ডে যাঁরা জড়িত, তাঁদের বিচার হোক।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী ফারদিন নূর ওরফে পরশের বাবা কাজী নূর উদ্দিন বলেছেন, ২৫ বছর ধরে বহু কষ্ট করে সন্তানকে গড়ে তুলেছেন তিনি ও তাঁর স্ত্রী ফারহানা ইয়াসমিন। ছেলের মৃত্যুতে তাঁদের সব স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে।

গতকাল সোমবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে শীতলক্ষ্যা নদী থেকে লাশ উদ্ধারের পর আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে ফারদিনের লাশের ময়নাতদন্ত হয়। ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক বলেছেন, ফারদিনের শরীরে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। তাঁকে হত্যা করা হয়েছে।

ছেলের যখন ময়নাতদন্ত চলছিল তখন বাইরে দাঁড়িয়ে ছিলেন বাবা কাজী নুর উদ্দিন। তিনি আইনের চোখকে বলেন, ‘এমন মৃত্যু মা–বাবা হিসেবে কীভাবে মেনে নিই? আমি তো আমার ছেলেকে ফেরত পাব না। এই যে মেধাবীদের ধরে ধরে হত্যা করা হচ্ছে, তাহলে তো কোনো মা–বাবা তাঁদের সন্তানকে বুয়েট বা উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোয় পাঠাবেন না। এই হত্যাকাণ্ডে যাঁরা জড়িত, তাঁদের বিচার হোক।’

নূর উদ্দিন বলেন, তাঁর স্ত্রী ফারহানা ইয়াসমিন ছেলের মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছেন। ছেলের শোকে তিনি শয্যাশায়ী। খাওয়াদাওয়া ছেড়ে দিয়েছেন।

ফারদিন নূর বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। তিনি নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার কুতুবপুর ইউনিয়নের নয়ামাটি এলাকার কাজী নূর উদ্দিনের ছেলে। তবে তাঁরা বর্তমানে রাজধানীর ডেমরার কোনাপাড়া শান্তিবাগ এলাকায় থাকেন।

ফারদিন নূরের মৃত্যুতে বাবা কাজী নূর উদ্দিন ও স্বজনদের আহাজারি। আজ দুপুরে নারায়ণগঞ্জ ভিক্টোরিয়া জেনারেল হাসপাতাল মর্গের সামনে

ফারদিন নূরের মৃত্যুতে বাবা কাজী নূর উদ্দিন ও স্বজনদের আহাজারি।

গত শুক্রবার দুপুরে ফারদিন কোনাপাড়ার বাসা থেকে বুয়েট আবাসিক হলের উদ্দেশে বের হন। পরের দিন শনিবার তাঁর পরীক্ষা ছিল। কিন্তু তিনি পরীক্ষায় অংশ নেননি। তাঁর মুঠোফোনও বন্ধ পাওয়া যায়। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাঁর সন্ধান পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় ফারদিনের বাবা কাজী নূর উদ্দিন বাদী হয়ে রামপুরা থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।

নারায়ণগঞ্জ সদর নৌ পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মনিরুল ইসলাম আইনের চোখকে বলেন, গতকাল বিকেলে অজ্ঞাত হিসেবে ফারদিনের লাশ উদ্ধার করা হয়। তখন ফারদিনের পকেটে একটি মুঠোফোন পাওয়া যায়। ওই মুঠোফোন থেকে সিম কার্ড বের করে অন্য একটি মুঠোফোনে লাগানো হলে এক মিনিটের মধ্যে তাঁর মা ফারহানা ইসলাম ফোন দেন। তখন তাঁর কাছ থেকে ফারদিনের পরিচয় জানা যায়। পরে ফারদিনের মা–বাবা এসে লাশ শনাক্ত করেন।