এটা চূড়ান্ত আন্দোলন নয়, অথচ আ.লীগ নস্যাৎ করার পাঁয়তারা করছে: ফখরুল


প্রকাশের সময় : নভেম্বর ১৭, ২০২২, ৬:৩১ অপরাহ্ণ / ৮৩
এটা চূড়ান্ত আন্দোলন নয়, অথচ আ.লীগ নস্যাৎ করার পাঁয়তারা করছে: ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক:- ঢাকায় বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ ‘বানচাল’ করতে ক্ষমতাসীনরা ‘হামলা, মামলা, গ্রেফতার’সহ সব প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের পরিষ্কার কথা- ঢাকার সমাবেশ হচ্ছে বিভাগীয় সমাবেশের সর্বশেষ সমাবেশ। এখান থেকে আমরা পরবর্তীতে আন্দোলন কর্মসূচি নির্ধারণে যাব। এটা চূড়ান্ত আন্দোলন কর্মসূচি নয়। অথচ আওয়ামী লীগ ইচ্ছাকৃতভাবে তা নস্যাৎ করার পাঁয়তারা করছে।

বৃহস্পতিবার গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব অভিযোগ করেন।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সামগ্রিকভাবে এমন একটা আবহাওয়া তৈরি করছে ঢাকার বিভাগীয় সমাবেশকে কেন্দ্র করে, যেন মনে হচ্ছে যে, ১০ তারিখে (১০ ডিসেম্বর) ঢাকায় একটা যুদ্ধ হবে।’

‘জ্বালানি তেলসহ নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি, বিএনপির আন্দোলনে পাঁচ নেতাকর্মীর নিহত হওয়ার প্রতিবাদে এবং দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি, নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সংসদ নির্বাচনের’ দাবিতে সব বিভাগীয় শহরে এ সমাবেশ করছে বিএনপি। ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় দলটির শেষ সমাবেশের কথা রয়েছে।

তিনি বলেন, জ্বালানি তেলসহ নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে আমরা বিভিন্ন কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে পালন করে আসছি। গত ১২ অক্টোবর ২০২২ থেকে বিভাগীয় পর্যায়ে একই দাবিতে গণসমাবেশ কর্মসূচি পালন করে আসছি। এ কর্মসূচিগুলো বাধাগ্রস্ত করতে সরকার, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের দলীয় সন্ত্রাসীদের দ্বারা বিরোধী মতের নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষকে হত্যা, হামলা করে আহত, গ্রেফতারসহ সব প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘ঢাকার সমাবেশকে বানচাল করার লক্ষ্যে মুন্সীগঞ্জে আমাদের নিরীহ লোকজনের ওপরে হামলা চালিয়ে, শহীদুল ইসলাম শাওনকে হত্যা করে, বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা সাজানো হয়েছে। সেই মামলায় আপনারা জানেন যে, আমাদের কেন্দ্রীয় সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক মুন্সীগঞ্জ জেলার সদস্য সচিব কামরুজ্জামান রতনকে আটক করে রাখা হয়েছে। স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি রফিক হাওলাদার, যুবদলের সাবেক সহ-সভাপতি আলী আকবর চুন্নুসহ বিভিন্ন থানায় ইতোমধ্যে ৫০ জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে। গতকাল (বুধবার) নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালিয়ে ৫০ জন নেতাকর্মীকে আহত করেছে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা খুব স্পষ্ট করে বলেছি, এখনো বলছি, আবারো বলছি, ঢাকার সমাবেশটা হচ্ছে আমাদের একটা বিভাগীয় সমাবেশ। আমরা যে ১০ বিভাগকে কেন্দ্র করে বিভাগীয় শহরে সমাবেশের কর্মসূচি দিয়েছিলাম, সেই সমাবেশগুলোর লাস্ট সমাবেশটা হচ্ছে ঢাকায়। ঢাকার এই সমাবেশ থেকে আমরা পরিবর্তী কর্মসূচি, পরবর্তী দাবি-দাওয়াগুলো নিয়ে আরও বৃহত্তর আন্দোলন নিয়ে আমরা সামনে আসব। এটা তো চূড়ান্ত সমাবেশ নয়, চূড়ান্ত আন্দোলনের কর্মসূচি নয়। এটা হচ্ছে আমাদের স্বাভাবিক বিভাগীয় গণতান্ত্রিক শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি।’

১০ ডিসেম্বর প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে সম্প্রতি আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বিএনপির উদ্দেশে বলেছিলেন, হেফাজত হতে চাইলে পরিষ্কার হয়ে যাবেন।

এ বিষয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘শোনেন, ওই একটা জিনিসই উনারা পারেন- অভ্যস্ত আর কি। সেই অবস্থা এখন আর নেই। আমি খুব স্পষ্ট করে বলতে চাই, হেফাজতের সময়ে তারা যেটা করেছেন, এখন জনগণের সঙ্গে সেটা তারা করতে পারবেন না। কারণ জনগণ তাদের জায়গায় দাঁড়িয়ে গেছে এবং জনগণ যেকোনো মূল্যে এবার তাদের দাবি আদায় করে ছাড়বে।’

গত ১২ অক্টোবর চট্টগ্রাম, ১৫ অক্টোবর ময়মনসিংহ, ২২ অক্টোবর খুলনা, ৫ নভেম্বর বরিশাল, ১২ নভেম্বর ফরিদপুরে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশে ‘বাধা’, নেতাকর্মীদের ওপর ‘নির্যাতন-অত্যাচার’, ‘গ্রেফতার-মামলার’ একটি নিজস্ব পরিসংখ্যান সংবাদ সম্মেলনে তুলে ধরেন ফখরুল।

বিএনপি মহাসচিব ‘বিদ্যুতের দাম আবারো বৃদ্ধির পাঁয়তারা’ এবং ‘ওএমএসে চালের জন্য মানুষের দীর্ঘ লাইন’- জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশিত এমন প্রতিবেদনের শিরোনাম তুলে ধরে বলেন, ‘এই আলামত কিসের? এই আলামত হচ্ছে যে, আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন- সেটা অমূলক করেন নাই। তিনি একটা অবস্থা তৈরি করে রাখতে চাচ্ছেন যেটা হতে পারে। যদি হয়, সেটা হবে তোমাদের কারণে, তোমাদের দুর্নীতির কারণে, তোমাদের অব্যবস্থাপনার কারণে, তোমাদের ক্ষমতায় টিকে থাকার… তোমরা বর্গীদের মতো কায়দায় দেশের সম্পদ লুণ্ঠন করে নিয়ে চলে যাচ্ছ, তার জন্য হবে।’