অস্থিরতা থাকবে তেলের দামে


প্রকাশের সময় : ডিসেম্বর ১৩, ২০২২, ৬:৩৪ অপরাহ্ণ / ৭৮
অস্থিরতা থাকবে তেলের দামে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:-   নতুন বছরে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ১১০ মার্কিন ডলারে পৌঁছাতে পারে। তবে রাশিয়াসহ বেশকিছু কারণে এর দাম আরও বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে বলে মনে করছে ব্যাংক অব আমেরিকা (বিওএফএ)। সম্প্রতি এক নোটে এমন পূর্বাভাস দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বহুজাতিক সংস্থাটি।

২০২২ সালে আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের বেঞ্চমার্ক ব্রেন্টের দাম ব্যারেলপ্রতি গড়ে ১০১ ডলারের মতো ছিল। ব্যাংক অব আমেরিকার ধারণা, ২০২৩ সালেও তেলের দাম মোটামুটি একই থাকবে।

 তেলের দামের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ঝুঁকি রাশিয়া হলেও আরও কিছু বিষয় রয়েছে। বিশেষ করে, লিবিয়া, নাইজেরিয়া, ইরাকের মতো ওপেক দেশগুলো থেকে সরবরাহ বিঘ্নিত হলে তেলের বাজারে সংকট দেখা দিতে পারে।

বিওএফএ বলেছে, নতুন বছরে ব্রেন্ট ক্রুডের দাম গড়ে ১০০ ডলার এবং ড্রাইভিং মৌসুমে সর্বোচ্চ ১১০ ডলার হতে পারে। বছরের বাকি অংশের তুলনায় ২০২৩ সালের প্রথম প্রান্তিকে তেলের দাম সবচেয়ে কম থাকবে।

বিশ্ববাজারে ব্রেন্টের দাম এখন ৮৬ ডলারের আশপাশে। অর্থাৎ ব্যাংক অব আমেরিকার পূর্বাভাস সঠিক হলে নতুন বছরে এর দাম ২৮ শতাংশ পর্যন্ত বাড়বে।

তবে বিওএফএ’র বিশ্লেষকরা বলেছেন, বেশকিছু ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়ের কারণে তেলের দাম আরও বেশি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, যার মধ্যে রুশ তেলের ওপর মূল্যসীমা আরোপ অন্যতম।

গত ২ ডিসেম্বর রাশিয়ার তেলে ব্যারেলপ্রতি ৬০ ডলার মূল্যসীমা আরোপে সম্মত হয় ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। গত ৫ ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হয়েছে এ সিদ্ধান্ত। এর পাশাপাশি ইইউতে রুশ তেল আমদানি এবং বিশ্বব্যাপী কার্গো সেবা সম্পর্কিত বেশ কিছু বিধিনিষেধও কার্যকর হয়েছে।

রাশিয়া বলেছে, তারা মূল্যসীমায় অংশগ্রহণকারী কোনো দেশের কাছে তেল বিক্রি করবে না। বিশ্লেষকদের ধারণা, এর প্রভাবে রুশ তেল রপ্তানি দৈনিক ১০ লাখ ব্যারেল পর্যন্ত কমে যেতে পারে।

ব্যাংক অব আমেরিকার নোটে বলা হয়েছে, আমাদের ধারণা, ২০২৩ সালে রাশিয়ার মোট তেল উৎপাদনের মাত্রা দৈনিক এক কোটি ব্যারেল হতে পারে। তবে আন্তর্জাতিক জ্বালানি সংস্থার (আইইএ) হিসাবে এর পরিমাণ ৯৫ লাখ ৯০ হাজার ব্যারেল। এ থেকে উৎপাদন যদি উল্লেখযোগ্যভাবে কম হয়, তাহলে তেলের দাম আরও বেড়ে যেতে পারে।

বিশ্লেষকদের মতে, তেলের দামের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ঝুঁকি রাশিয়া হলেও আরও কিছু বিষয় রয়েছে। বিশেষ করে, লিবিয়া, নাইজেরিয়া, ইরাকের মতো ওপেক দেশগুলো থেকে সরবরাহ বিঘ্নিত হলে তেলের বাজারে সংকট দেখা দিতে পারে।

ব্যাংক অব আমেরিকার আশঙ্কা, দৈনিক সরবরাহ ১০ লাখ ব্যারেল কমে গেলে তেলের দাম ২০ থেকে ২৫ ডলার বেড়ে যেতে পারে। এছাড়া গ্যাস-টু-অয়েল রূপান্তর এবং চীনের করোনা সম্পর্কিত কড়াকড়িও আগামী বছর তেলের মূল্যবৃদ্ধিতে প্রভাব ফেলতে পারে।

তবে এক্ষেত্রে বিপরীত চিত্র সৃষ্টি করতে পারে অর্থনৈতিক মন্দার ঝুঁকি। অতীতে প্রতিটি বৈশ্বিক মন্দায় গড়ে দৈনিক ৬ লাখ ৪০ হাজার ব্যারেল পর্যন্ত তেলের চাহিদা কমেছে বলে উল্লেখ করেছে বিওএফএ।

সূত্র: বিজনেস ইনসাইডার